Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

ইউপি বিধিমালা

ইউনিয়ন পরিষদ সংক্রান্ত বিদ্যমান অধ্যাদেশ রহিত করিয়া একটি নূতন আইন প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন

 
 
 
      যেহেতু, ইউনিয়ন পরিষদ সংক্রান্ত বিদ্যমান অধ্যাদেশ রহিত করিয়া একটি নূতন আইন প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

      সেহেতু, এতদ্‌দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইলঃ-
   
    প্রথম অধ্যায়
প্রারম্ভিক
   
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রয়োগ ও প্রবর্তন  
১। (১) এই আইন স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ নামে অভিহিত হইবে।

(২) ইহা সমগ্র বাংলাদেশে প্রযোজ্য হইবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোন নির্দিষ্ট এলাকাকে এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধানের সকল বা কোন বিধানের প্রয়োগ হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে।

(৩) ইহা অবিলম্বে কাযর্কর হইবে।
   
 
   
     
   
সংজ্ঞা  
২। বিষয় বা প্রসংগের পরিপন্থী কিছু না থাকিলে, এই আইনে-

(১) 'আইন প্রয়োগকারী সংস্থা' অর্থ পুলিশ বাহিনী, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ান, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র‌্যাব), আনসার বাহিনী, ব্যাটালিয়ান আনসার, বাংলাদেশ রাইফেলস, কোস্ট গার্ড বাহিনী এবং প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহ;

(২) 'আচরণ বিধিমালা' অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত আচরণ বিধিমালা;

(৩) 'আর্থিক প্রতিষ্ঠান' অর্থ আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩ (১৯৯৩ সনের ২৭ নং আইন) এর ধারা ২ এবং অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ (২০০৩ সনের ৮ নং আইন) এর ধারা ২ এ সংজ্ঞায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠান;

(৪) 'ইমারত' অর্থে কোন দোকান, বাড়িঘর, কুঁড়েঘর, বৈঠকঘর, চালা, আস্তাবল বা যে কোন প্রয়োজনে যে কোন দ্রব্যাদি সহযোগে নির্মিত কোন ঘেরা, দেয়াল, পানি-সংরক্ষণাগার, বারান্দা, প্লাটফরম, মেঝে ও সিঁড়িও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(৫) 'ইউনিয়ন' অর্থ এই আইনের ধারা ১১ এর অধীন ইউনিয়ন হিসাবে ঘোষিত পল্লী এলাকা এবং বিদ্যমান ইউনিয়নসমূহ;

(৬) 'ইউনিয়ন পরিষদ' অর্থ এই আইনের ধারা ১০ এর অধীন গঠিত একটি ইউনিয়ন পরিষদ;

(৭) 'উপজেলা' অর্থ উপজেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮ (১৯৯৮ সনের ২৪ নং আইন) এর অধীনে উপজেলা হিসাবে ঘোষিত এলাকা এবং বিদ্যমান উপজেলাসমূহ;

(৮) 'উপজেলা পরিষদ' অর্থ উপজেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮ (১৯৯৮ সনের ২৪ নং আইন) এর অধীনে গঠিত উপজেলা পরিষদ;

(৯) 'উপজেলা নির্বাহী অফিসার' অর্থ একটি উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার;

(১০) 'ওয়ার্ড' অর্থ ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড;

(১১) 'কর' অর্থ কোন কর, উপ-কর, রেইট, টোল, ফি, শুল্ক অথবা এই আইনের অধীন আরোপযোগ্য কোন করও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(১২) 'গ্রাম এলাকা' অর্থ শহর হিসাবে ঘোষিত নয় এইরূপ এলাকা;

(১৩) 'চেয়ারম্যান' অর্থ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান;

(১৪) 'জনপথ' অর্থ সর্বসাধারনের ব্যবহার্য পথ, রাস্তা ও সড়ক;

(১৫) 'জনসংখ্যা' অর্থ সর্বশেষ আদমশুমারিতে উল্লিখিত জনসংখ্যা;

(১৬) 'জমি' অর্থ নির্মাণাধীন বা নির্মিত অথবা জলমগ্ন যে কোন জমি;

(১৭) 'জেলা' অর্থ District Act, 1836 (Act No. 1 of 1836) এর অধীন সৃষ্ট জেলা;

(১৮) 'ডেপুটি কমিশনার' অর্থে এই আইনের অধীন সরকার কর্তৃক বিশেষভাবে নিয়োগকৃত কোন কর্মকর্তাকে বুঝাইবে যিনি ডেপুটি কমিশনারের সকল কিংবা যে কোন কার্য পালন করিবেন;

(১৯) 'তফসিল' অর্থ এই আইনের কোন তফসিল;

(২০) 'তহবিল' অর্থ ধারা ৫৩ এর অধীন গঠিত ইউনিয়ন পরিষদের তহবিল;

(২১) 'থানা' অর্থ ফৌজদারী কার্যবিধি, ১৮৯৮ (১৮৯৮ সনের ৫নং আইন) এর বিধান অনুযায়ী গঠিত পুলিশ স্টেশন;

(২২) 'দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা' অর্থ এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার বা তৎকর্তৃক ক্ষমতা প্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্তৃক নিযুক্ত কোন কর্মকর্তা;

(২৩) 'নগর এলাকা' অর্থ নগর হিসাবে ঘোষিত এলাকা;

(২৪) 'নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ' অর্থ সরকার বা এই আইনের কোন সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার কর্তৃক ক্ষমতা প্রদত্ত যে কোন সরকারি কর্মকর্তা;

(২৫) "নির্ধারিত পদ্ধতি' অর্থ বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি।

(২৬) 'নির্বাচন কমিশন' অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৮ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত নির্বাচন কমিশন;

(২৭) 'নির্বাচন পর্যবেক্ষক' অর্থ কোন ব্যক্তি বা সংস্থা, যাহাকে নির্বাচন কমিশন বা এতদুদ্দেশ্যে তদকর্তৃক অনুমোদিত কোন ব্যক্তি কর্তৃক এই আইনের অধীন কোন নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য লিখিতভাবে অনুমতি দেওয়া হইয়াছে;

(২৮) 'নির্ভরশীল' অর্থ প্রার্থীর স্বামী বা স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে, সৎ ছেলে-মেয়ে, পিতা, মাতা, ভাই বা বোন যিনি প্রার্থীর উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল;

(২৯) 'নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধ' অর্থে দণ্ড বিধি, ১৮৬০ (Penal Code, 1860) এ সংজ্ঞায়িত চাঁদাবাজি, চুরি, সম্পত্তি আত্নসাৎ, বিশ্বাস ভংগ, ধর্ষণ, হত্যা, খুন এবং Prevention of Corruption Act, 1947 (Act.II of 1947) এ সংজ্ঞায়িত Criminal Misconduct ও ইহার অর্ন্তভুক্ত হইবে;

(৩০) 'পথ' অর্থে জনসাধারণের চলাচলের জন্য ব্যবহৃত হোক বা না হোক পায়ে চলার এমন পথ, মাঠ, বহিরাঙ্গন বা চলাচলের রাস্তা বা সড়কও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(৩১) 'পরিষদ' অর্থ এই আইনের অধীন গঠিত ইউনিয়ন পরিষদ;

(৩২) 'প্রবিধান' অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;

(৩৩) 'বাজার' অর্থ এমন কোন স্থান যেখানে জনগণ মাছ, মাংস, ফল-মূল, শাক-সবব্জী বা অন্য যে কোন খাদ্য দ্রব্য বিক্রয় ও ক্রয়ের জন্য সমবেত হয় অথবা পশু বা গরু-ছাগল ও পশু-পক্ষী ক্রয়-বিক্রয় হয় এবং এমন কোন স্থান যাহা বিধি মোতাবেক বাজার হিসাবে ঘোষণা করা হইয়াছে;

(৩৪) 'বাজেট' অর্থ ইউনিয়ন পরিষদের একটি আর্থিক বৎসরের আয় ও ব্যয়ের নির্ধারিত আর্থিক বিবরণ;

(৩৫) 'বার্ষিক মূল্য' অর্থ কোন গৃহ বা জমি প্রতি বছর ভাড়া দিয়া প্রাপ্ত অথবা প্রাপ্য মোট টাকা;

(৩৬) 'বিধি' অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;

(৩৭) 'ব্যাংক' অর্থ-

(ক) ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ (১৯৯১ সনের ১৪ নং আইন) এর ধারা ৫(ণ) এ সংজ্ঞায়িত ব্যাংক কোম্পানী;


(খ) The Bangladesh Shilpa Rin Sangstha Order, 1972 (P.O.No. 128 of 1972) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থা;

(গ) The Bangladesh Shilpa Bank Order, 1972 (P.O. No. 129 of 1972) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক;

(ঘ) The Bangladesh House Building Finance Corporation Order, 1973 (P.O. No.17 of 1973) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইনান্স কর্পোরেশন;

(ঙ) The Bangladesh Krishi Bank Order, 1973 (P.O. No. 27 of 1973) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক;

(চ) The Investment Corporation of Bangladesh Ordinance, 1976 (Ordinance No. XL of 1976) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত ইনভেষ্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ;



(ছ) The Rajshahi Krishi Unnayan Bank Ordinance, 1986 (Ordinance No.LVIII of 1986) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক; বা

(জ) কোম্পানী আইন ১৯৯৪ (১৯৯৪ সনের ১৮ নং আইন) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত Basic Bank Limited (Bangladesh Small Industries and Commerce Bank Limited);

(৩৮) 'মৌজা' অর্থ কোন নির্দিষ্ট এলাকা যাহা ভূমি জরিপের মাধ্যমে কোন জেলার ভূমি সংক্রান্ত দলিলে মৌজা হিসাবে লিপিবদ্ধ ও সংজ্ঞায়িত;

[ (৩৮ক) ‘‘রাজনৈতিক দল’’ অর্থ Representaion of the People Order, 1972 (P.O. No. 155 of 1972) এর Article 2 (xixa)তে সংজ্ঞায়িত registered political party;]


(৩৯) 'রাস্তা' অর্থে জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত নয় এমন রাস্তাও ইহার অর্ন্তভুক্ত হইবে;

(৪০) 'লাভজনক পদ' (Office of profit) অর্থ প্রজাতন্ত্র কিংবা সরকারী সংবিধিবদ্ধ কতৃর্পক্ষ কিংবা পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি ও যে সকল কোম্পানীতে সরকারের ৫০% এর অধিক শেয়ারের মালিকানা আছে সে সকল কোম্পানীতে সাবর্ক্ষণিক বেতনভুক্ত অফিস, পদ বা অবস্থান;

(৪১) 'সংক্রামক ব্যাধি' অর্থে এমন ব্যাধি যাহা একজন ব্যক্তি হইতে অন্য ব্যক্তিকে সংক্রামিত করে এবং সরকার কর্তৃক সরকারি গেজেটে প্রকাশিত অন্য যে কোন ব্যাধিও ইহার অনত্দর্ভুক্ত হইবে;

(৪২) 'সংবিধান' অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান;

(৪৩) 'সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ' অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৫২(১) অনুচ্ছেদে সংজ্ঞায়িত কোন সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ;

(৪৪) 'সদস্য' অর্থ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য;

(৪৫) 'সরকার' অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার;

(৪৬) 'সরকারি রাস্তা' অর্থ সরকার কিংবা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান অথবা অন্য কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক রক্ষণাবেক্ষণাধীন জনসাধারণের চলাচলের জন্য সকল রাস্তা;

[ (৪৬ক) ‘‘স্বতন্ত্র প্রার্থী’’ অর্থ এইরূপ কোন প্রার্থী যিনি কোন রাজনৈতিক দল কর্তৃক মনোনয়নপ্রাপ্ত নহেন;]

(৪৭) 'স্থানীয় কর্তৃপক্ষ' অর্থ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান বা অন্য কোন আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত কোন বিধিবদ্ধ সংস্থা;

(৪৮) 'স্থায়ী কমিটি' অর্থ এই আইনের অধীন গঠিত ইউনিয়ন পরিষদের স্থায়ী কমিটি;

(৪৯) 'হাট' অর্থ পণ্যসামগ্রী, খাদ্য, মালামাল, পশুসম্পদ, ইত্যাদি সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন ও সময়ে ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য নির্ধারিত স্থান।
   
 
   
    দ্বিতীয় অধ্যায়
ওয়ার্ড
   
ওয়ার্ড গঠন  
৩। (১) ইউনিয়ন পযার্য়ে সংরক্ষিত আসন ব্যতিরেকে সাধারণ সদস্য নিবার্চনের জন্য ইউনিয়নকে ৯(নয়) টি ওয়ার্ডে বিভক্ত করিতে হইবে।

(২) সংরক্ষিত আসনে সদস্য নিবার্চনের উদ্দেশ্যে একটি ইউনিয়নকে ৩ (তিন) টি ওয়ার্ডে বিভক্ত করিতে হইবে।
   
 
   
     
   
ওয়ার্ড সভা  
৪। (১) এই আইনের অধীন ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি ওয়ার্ড সভা গঠন করিতে হইবে।

(২) প্রত্যেক ওয়ার্ডের ভোটার তালিকায় অন্তভুর্ক্ত ব্যক্তিগণের সমন্বয়ে ঐ ওয়ার্ডের ওয়ার্ড সভা গঠিত হইবে।
   
 
   
     
   
ওয়ার্ড পর্যায়ে উন্মুক্ত সভা  
৫। (১) প্রত্যেক ওয়ার্ড সভা উহার স্থানীয় সীমার মধ্যে বৎসরে কমপক্ষে ২ (দুই) টি সভা অনুষ্ঠিত করিবে, যাহার একটি হইবে বাৎসরিক সভা।

(২) ওয়ার্ড সভার কোরাম সবর্মোট ভোটার সংখ্যার বিশ ভাগের একভাগ দ্বারা গঠিত হইবে;

তবে মূলতবী সভার জন্য কোরাম আবশ্যক হইবে না, যাহা সাত দিন পর একই সময় ও স্থানে অনুষ্ঠিত হইবে।

(৩) ইউনিয়ন পরিষদ ওয়ার্ড সভা অনুষ্ঠানের অন্যূন সাতদিন পুর্বে যথাযথভাবে সহজ ও গ্রহণযোগ্য উপায়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করিবে; মূলতবী সভার ক্ষেত্রেও অনুরুপ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করিতে হইবে।

(৪) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়ার্ড সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করিবেন এবং সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড সদস্য সভাপতি হিসাবে উক্ত সভা পরিচালনা করিবেন।

(৫) সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের সদস্য ওয়ার্ড সভার উপদেষ্টা হইবেন।

(৬) ওয়ার্ড সভায় ওয়ার্ডের সাবির্ক উন্নয়ন কাযর্ক্রমসহ অন্যান্য বিষয়সমূহ পযার্লোচনা করা হইবে; বার্ষিক সভায় সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড সদস্য বিগত বৎসরের বার্ষিক প্রতিবেদন এবং আর্থিক সংশ্লেষসহ ওয়ার্ডের চলমান সকল উন্নয়ন কাযর্ক্রম সম্পর্কে অবহিত করিবেন এবং ওয়ার্ড সভার কোন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা সম্ভব না হইলে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড সদস্য এবং পরিষদের চেয়ারম্যান উহার যৌক্তিকতা ওয়ার্ড সভায় উপস্থাপন করিবেন।
   
 
   
     
   
ওয়ার্ড সভার ক্ষমতা, কার্যাবলী, ইত্যাদি  
৬। (১) এই আইনের বিধান সাপেক্ষে এবং নির্ধারিত পদ্ধতিতে ওয়ার্ড সভার নিম্নবর্ণিত ক্ষমতা, কার্যাবলী ও অধিকার থাকিবে, যথা :-

(ক) ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সংগ্রহ ও বিন্যস্তকরণে সহায়তা প্রদান;

(খ) ওয়ার্ড পযার্য়ে প্রকল্প প্রস্তাব প্রস্তুত এবং বাস্তবায়নযোগ্য স্কীম ও উন্নয়ন কর্মসূচির অগ্রাধিকার নিরূপণ;

(গ) নির্ধারিত নির্ণায়কের ভিত্তিতে বিভিন্ন সরকারি কর্মসূচির উপকারভোগীদের চূড়ান্ত অগ্রাধিকার তালিকা প্রস্তুত ও ইউনিয়ন পরিষদের নিকট হস্তান্তর;

(ঘ) উন্নয়ন প্রকল্প কাযর্করভাবে বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয়ভাবে প্রয়োজনীয় সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদান;

(ঙ) স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে স্থানীয় উন্নয়ন কাযর্ক্রম এবং সেবামূলক কাযর্ক্রম বাস্তবায়নে উৎসাহ প্রদান ও সহায়তাকরণ;

(চ) রাস্তার বাতি, নিরাপদ পানির উৎস ও অন্যান্য জনস্বাস্থ্য ইউনিট, সেচ সুবিধাদি এবং অন্যান্য জনকল্যাণমূলক প্রকল্প স্থান বা এলাকা নির্ধারণের জন্য পরিষদকে পরামর্শ প্রদান;

(ছ) পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, পরিবেশ সংরক্ষণ, বৃক্ষ রোপণ, পরিবেশ দূষণ রোধ, দুনীর্তিসহ অন্যান্য সামাজিক অপকর্মের বিষয়ে গণসচেতনতা সৃষ্টি করা;

(জ) ওয়ার্ডের বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার লোকের মধ্যে ঐক্য ও সুসম্পর্ক সৃষ্টি করা, সংগঠন গড়ে তোলা এবং বিভিন্ন প্রকার ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা;

(ঝ) ওয়ার্ডের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত উপকারভোগী শ্রেণী বা গোষ্ঠীকে উদ্বুদ্ধ, তদারক ও সহায়তা প্রদান;

(ঞ) সরকারের বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মসূচিভুক্ত (যেমন, বয়স্কভাতা, ভর্তুকি, ইত্যাদি) ব্যক্তিদের তালিকা যাচাই করা;

(ট) ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় বাস্তবায়নযোগ্য কাজের প্রাক্কলন সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সংরক্ষণ;

(ঠ) সম্পাদিতব্য কাজ ও সেবাসমূহের বিস্তারিত তথ্য সরবরাহ;

(ড) পরিষদ কতৃর্ক ওয়ার্ড সংক্রান্ত বিষয়ে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের যৌক্তিকতাসমূহ অবহিত হওয়া;

(ঢ) ওয়ার্ড সভা কতৃর্ক গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পযার্লোচনা করা এবং কোন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণ অনুসন্ধান করা;

(ণ) জনস্বাস্থ্য বিষয়ক কার্যক্রম, বিশেষত: বিভিন্ন প্রকার রোগ প্রতিরোধ এবং পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমে সক্রিয় সহযোগিতা করা; স্যানিটেশন কাযর্ক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণকে বর্জ্য অপসারণের ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে সহায়তা প্রদান;

(ত) ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় নিরাপদ পানি সরবরাহ, রাস্তা আলোকিতকরণ ও অন্যান্য সেবা প্রদানে ত্রুটি বিচ্যুতিসমূহ চিহ্নিত করা এবং উহা দূরীকরণের ব্যবস্থা করা;

(থ) ওয়ার্ডের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক-শিক্ষক সম্পর্ক উন্নয়ন;

(দ) যৌতুক, বাল্যবিবাহ, বহু বিবাহ ও এসিড নিক্ষেপ ও মাদকাসক্তের মত সামাজিক সমস্যা দূরীকরণে সামাজিক আন্দোলন গড়িয়া তোলা;

(ধ) জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদান করা;

(ন) আত্ম-কর্মসংস্থানসহ অন্যান্য অর্থনৈতিক কর্মকান্ড উৎসাহিত করা;

(প) সরকার বা পরিষদ কর্তৃক অর্পিত অন্যান্য দায়িত্ব সম্পাদন।

(২) ওয়ার্ড সভা ইহার সাধারণ বা বিশেষ সভায় প্রাপ্ত বিভিন্ন প্রতিবেদন পর্যালোচনা করিবে; তাছাড়া উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত উল্লেখযোগ্য কার্যাবলী, বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমের বাজেট বিভাজন, কর্মপরিকল্পনা, খাত ভিত্তিক অর্থ বরাদ্দ, প্রাক্কলন, সম্পাদিত ও সম্পাদিতব্য কাজের মালামাল ক্রয় বাবদ অর্থ ব্যয় ইত্যাদি বিষয়ে জনগণকে অবহিত করার লক্ষ্যে ওয়ার্ডের উন্মুক্ত দর্শনীয় স্থানে বোর্ডে লিখে টাঙ্গাইয়া দিবেন।

(৩) ওয়ার্ড সভায় অডিট রিপোর্ট উপস্থাপন ও আলোচনা করিতে হইবে এবং এই বিষয়ে সভার মতামত ও সুপারিশ পরিষদের বিবেচনার জন্য প্রেরণ করিতে হইবে।



(৪) ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ওয়ার্ড সভায় উপস্থিত থাকিয়া সভার কার্যবিবরণী তৈরী ও গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ রেকর্ড করিবেন এবং বাস্তবায়ন অগ্রগতি পরবর্তী পরিষদ ও ওয়ার্ড সভায় উপস্থাপন করিবেন।

(৫) ওয়ার্ড সভা কোন সাধারণ বা বিশেষ কাযার্দি সম্পন্ন করিবার উদ্দেশ্যে এক বা একাধিক উপ-কমিটি গঠন করিতে পারিবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, উপ-কমিটির সদস্য সংখ্যা ১০ (দশ) জনের অধিক হইবে না এবং তন্মধ্যে অন্যূন ৩ (তিন) জন মহিলা হইবেন ।

(৬) সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে ওয়ার্ড সভার সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে, তবে যতদূর সম্ভব সাধারণ ঐক্যমত্যের এবং সভায় উপস্থিত মহিলাদের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয় হইবে।

(৭) ওয়ার্ড সভা বিজ্ঞপ্তি আহবানের মাধ্যমে সম্ভাব্য উপকারভোগীদের নিকট হইতে প্রাপ্ত দরখাস্তসমূহ তদন্ত করিয়া যাচাই বাছাইয়ের জন্য সভায় উপস্থাপন করিবে; সভায় যাচাই বাছাইয়ের পর নির্ধারিত নির্ণায়কের ভিত্তিতে উপকারভোগীদের চূড়ান্ত অগ্রাধিকার তালিকা প্রস্তুত করা হইবে এবং উহা পরিষদের অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করিতে হইবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, কোনরূপ অনিয়ম প্রমাণিত না হইলে পরিষদ ওয়ার্ড সভা কতৃর্ক প্রস্তুতকৃত ও প্রেরিত অগ্রাধিকার তালিকা পরিবর্তন করিতে পারিবে না।
   
 
   
     
   
ওয়ার্ড সভার দায়িত্ব  
৭। (১) ওয়ার্ড সভা নিম্নলিখিত দায়িত্ব পালন করিবে,যথাঃ -

(ক) ওয়ার্ডের উন্নয়নমূলক ও জনকল্যাণমুখী কাযর্ক্রমের অগ্রগতি ও অন্যান্য তথ্য সরবরাহ;

(খ) কৃষি, মৎস্য, হাঁস-মুরগি ও পশুপালন, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, শিক্ষা, জনস্বাস্থ্য, যোগাযোগ, যুব উন্নয়ন, ইত্যাদি বিষয়ক উন্নয়ন কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ;

(গ) জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনসহ অত্যাবশ্যকীয় আর্থ-সামাজিক উপাত্ত সংগ্রহ;

(ঘ) বৃক্ষ রোপণ ও পরিবেশ উন্নয়ন এবং পরিবেশ দূষণমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন রাখা;

(ঙ) নারী ও শিশু নির্যাতন, নারী ও শিশু পাচার এবং যৌতুক, বাল্যবিবাহ ও এসিড নিক্ষেপ নিরোধ কাযর্ক্রম, দুনীর্তিসহ অন্যান্য সামাজিক অপকর্মের বিরূদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা;

(চ) ওয়ার্ডের আইন-শৃংখলা রক্ষাসহ সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখা;

(ছ) জনগণকে কর, ফি, রেইট, ইত্যাদিসহ বিভিন্ন প্রকার ঋণ পরিশোধের জন্য উদ্বুদ্ধ করা;

(জ) স্থানীয় সম্পদের সংগ্রহ ও উন্নয়নের মাধ্যমে পরিষদের সম্পদের উন্নয়নে সহায়তা করা;

(ঝ) স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে উন্নয়নমূলক ও অন্যান্য সমাজগঠনমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নে এবং সংগঠন তৈরীতে সহায়তা;

(ঞ) মহামারী ও প্রাকৃতিক দুযোর্গ মোকাবেলায় জরুরী ভিত্তিতে করণীয় নির্ধারণ।

(২) ওয়ার্ড সভার কার্যাবলী সম্পর্কে পরিষদকে রিপোর্ট প্রদান।

(৩) ধারা ৬ ও উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত ক্ষমতা ও কার্যাবলী ছাড়াও ওয়ার্ড সভা, ক্ষেত্র বিশেষে, বিশেষ সভা আহবানের জন্য পরিষদকে অনুরোধ করিতে পারিবে।

(৪) ওয়ার্ড সভার পূর্ব বা পরবর্তী অনুমোদনবিহীন কোন ব্যয় যাহার দায়িত্বে ব্যয়িত হইবে, উহা তাহার ব্যক্তিগত দায় হিসাবে গণ্য হইবে।
   
 
   
    তৃতীয় অধ্যায়
পরিষদ
   
ইউনিয়নকে প্রশাসনিক একাংশ ঘোষণা  
৮। এই আইনের অধীন ঘোষিত প্রত্যেকটি ইউনিয়নকে, সংবিধানের ১৫২(১) অনুচ্ছেদের সহিত পঠিতব্য ৫৯ অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে এতদ্বারা প্রজাতন্ত্রের প্রশাসনিক একাংশ বলিয়া ঘোষণা করা হইল।
   
 
   
     
   
পরিষদ সৃষ্টি  
৯।(১) এই আইন বলবৎ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যমান সকল ইউনিয়ন পরিষদ এই আইনের বিধান অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদ হিসাবে গঠিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

(২) পরিষদ একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সীলমোহর থাকিবে এবং এই আইন ও বিধি সাপেক্ষে, ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার ও হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং ইহা নিজ নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে অথবা ইহার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা যাইবে।

(৩) পরিষদ এই আইন দ্বারা প্রদত্ত ক্ষমতা, কার্যাবলী এবং দায়িত্ব পালন করিবে।
   
 
   
     
   
পরিষদ গঠন  
১০। (১) ইউনিয়ন পরিষদ ১ (এক) জন চেয়ারম্যান ও ১২ (বার) জন সদস্য লইয়া গঠিত হইবে যাহাদের ৯ (নয়) জন সাধারণ আসনের সদস্য ও ৩ (তিন) জন সংরক্ষিত আসনের সদস্য হইবেন।

(২) উপ-ধারা (৩) এর বিধান সাপেক্ষে, চেয়ারম্যান ও সাধারণ আসনের সদস্যগণ এই আইন ও বিধি অনুসারে প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হইবেন।

(৩) প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদে শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য ৩(তিন)টি আসন সংরক্ষিত থাকিবে, যাহা সংরক্ষিত আসন বলিয়া অভিহিত হইবে এবং উক্ত সংরক্ষিত আসনের সদস্যগণও এই আইন ও বিধি অনুসারে প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হইবেন :

তবে শর্ত থাকে যে, উপ-ধারা (১) এর বিধান অনুসারে ৯(নয়)টি সাধারণ আসনের সদস্য নির্বাচনে মহিলা প্রার্থীদের সরাসরি অংশগ্রহণকে বারিত করিবে না।

(৪) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উক্ত পরিষদের একজন সদস্য বলিয়া গণ্য হইবেন।

(৫) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সম্মানী পাইবেন।

(৬) এই আইনের অধীনে গঠিত প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নাম সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপিত হইবে।

(৭) সরকার ইউনিয়নে কর্মরত সকল সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপর পরিষদের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্ধারণ করিবে।
   
 
   
     
   
ইউনিয়ন গঠন  
১১। (১) ডেপুটি কমিশনার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নির্ধারিত পদ্ধতিতে কতকগুলি গ্রাম বা সংলগ্ন মৌজা বা গ্রামের সমন্বয়ে ১(এক) টি ওয়ার্ড এবং ৯ (নয়) টি ওয়ার্ডের সমন্বয়ে একটি ইউনিয়ন ঘোষণা করিবেন।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন ঘোষিত ইউনিয়ন ডেপুটি কমিশনার কর্তৃক নির্ধারিত নামে অভিহিত হইবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, ইউনিয়নের নামকরণ কোন ব্যক্তির নামে হইবে না।

(৩) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে ইউনিয়নের ওয়ার্ডসমূহের ক্রমিক নম্বর এবং উক্ত ওয়ার্ডের স্থানীয় সীমানা নির্দিষ্ট করিতে হইবে।

(৪) সরকার প্রত্যেক ওয়ার্ড ও ইউনিয়নের লোক সংখ্যা নির্ধারণ করিবে।

(৫) ডেপুটি কমিশনার যেইরূপ অনুসন্ধান করা উপযুক্ত মনে করিবেন, সেইরূপ অনুসন্ধান করিয়া পরিষদ গঠন করিবার পর, প্রজ্ঞাপন দ্বারা-

(ক) কোন ওয়ার্ড হইতে যে কোন মৌজা বা গ্রাম বা উহার অংশ বিশেষ বাদ দিতে পারিবেন;

(খ) কোন ইউনিয়ন বা ওয়ার্ডকে একাধিক ইউনিয়ন বা ওয়ার্ডে বিভক্ত করিতে পারিবেন; অথবা

(গ) কোন ইউনিয়ন বা ওয়ার্ড এবং উহার সংলগ্ন এলাকাকে অন্তর্ভুক্ত করিয়া একটি ইউনিয়ন বা ওয়ার্ড পুনর্গঠন করিতে পারিবেনঃ

তবে শর্ত থাকে যে, উপ-ধারা (১) অনুসারে কোন ইউনিয়ন পরিষদ উহার এলাকাভুক্ত এবং বাতিলকৃত কোন ওয়ার্ডের প্রতিনিধিত্ব না থাকিবার কারণে উক্ত পরিষদ গঠনের বৈধতা ক্ষুণ্ন হইবে না।
   
 
   
     
   
সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা নিয়োগ  
১২। (১) উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওয়ার্ডের সীমানা নির্ধারণের উদ্দেশ্যে প্রজাতন্ত্রের চাকুরিতে নিয়োজিত ব্যক্তিদের মধ্য হইতে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় সংখ্যক সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা ও সহকারী সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা নিয়োগ করিতে পারিবেন।

(২) সহকারী সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তার অধীনে কার্য সম্পাদন করিবেন ।
   
 
   
     
   
ওয়ার্ডের সীমানা নির্ধারণ  
১৩। (১) ওয়ার্ডসমূহের সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে এলাকার ভৌগোলিক অখণ্ডতা এবং জনসংখ্যার বিন্যাস ও প্রশাসনিক সুবিধাদির প্রতি লক্ষ্য রাখিতে হইবে [ ***]।

(২) সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা ওয়ার্ডসমূহের সীমানা নির্ধারণের উদ্দেশ্যে যেরূপ প্রয়োজন মনে করিবেন সেইরূপ রেকর্ড-পত্র পরীক্ষা, তদন্ত এবং এতদ্‌সংক্রান্ত বিষয়ে উপস্থাপিত প্রস্তাবসমূহ বিবেচনা করিতে পারিবেন এবং প্রস্তাবিত কোন্ এলাকা কোন্ ওয়ার্ডের অর্ন্তভুক্ত হইবে উহা উল্লেখ করিয়া ওয়ার্ডসমূহের একটি প্রাথমিক তালিকা তাহার দফতর, বিভিন্ন স্তরভুক্ত পরিষদ কার্যালয় ও তিনি যেরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করিবেন সেইরূপ অন্যান্য উম্মুক্ত স্থানে প্রকাশ করিবেন।

(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন প্রাথমিক তালিকা প্রকাশের ১৫ (পনের) কার্য দিবসের মধ্যে তৎসম্পর্কে আপত্তি ও পরামর্শ দাখিল করিবার আহবান সম্বলিত নোটিশ তাহার দফতর, বিভিন্ন স্তরভুক্ত পরিষদ কার্যালয় ও তিনি যেরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করিবেন সেইরূপ অন্যান্য উম্মুক্ত স্থানে প্রকাশ করিবেন।

(৪) সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা উপ-ধারা (৩) এর অধীন প্রাপ্ত আপত্তি বা পরামর্শ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট প্রেরণ করিবেন; উপজেলা নিবার্হী অফিসার উক্তরূপ আপত্তি বা পরামর্শ প্রাপ্তির তারিখ হইতে অনধিক ১৫ (পনের) কার্য দিবসের মধ্যে যেরূপ উপযুক্ত মনে করিবেন সেইরূপ তদন্তের পর তাহার সিদ্ধান্ত সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তাকে জানাইবেন।

(৫) উপ-ধারা (৪) অনুযায়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্ত অনুসারে সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা উপ-ধারা (২) এর অধীন প্রকাশিত প্রাথমিক তালিকা সংশোধন, পরিবর্তন বা রদবদল করিবেন।

(৬) সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা উপ-ধারা (৫) অনুযায়ী সংশোধন, পরিবর্তন বা রদবদল করিবার পর, তাঁহার দফতরে, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এবং তাহার বিবেচনানুসারে অন্য কোন স্থানে ওয়ার্ডসমূহের সংশোধিত তালিকা প্রকাশ করিবেন যাহাতে প্রতি ওয়ার্ডে অর্ন্তভুক্ত এলাকাসমূহ নির্দেশ করিতে হইবে।

(৭) উপ-ধারা (৬) এর অধীন প্রকাশিত তালিকার বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ লিখিতভাবে অনধিক ১০ (দশ) কার্য দিবসের মধ্যে ডেপুটি কমিশনারের নিকট আপিল দায়ের করিতে পারিবেন; ডেপুটি কমিশনার আপিলকারী ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে শুনানির সুযোগ দিয়া উপজেলা নিবার্হী অফিসারের সিদ্ধান্ত এবং সংশ্লিষ্ট নথিপত্র ও তথ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়া আপিল দায়েরের অনধিক ৩০ (ত্রিশ) কার্য দিবসের মধ্যে সিদ্ধান্ত প্রদান করিবেন এবং আপিল কতৃর্পক্ষ হিসেবে ডেপুটি কমিশনারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।

(৮) উপ-ধারা (৭) এর অধীন আপিল কতৃর্পক্ষের সিদ্ধান্তের পর সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা ওয়ার্ডের সীমানার প্রয়োজনীয় সংশোধন, পরিবর্তন বা রদবদল করিয়া অথবা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আপীল দায়ের করা না হইয়া থাকিলে সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা প্রতিটি ওয়ার্ডে অর্ন্তভূক্ত এলাকাসমূহ উল্লেখ করিয়া ওয়ার্ডসমূহের চূড়ান্ত তালিকা তাঁহার দফতরে, পরিষদের কার্যালয় ও তাঁহার বিবেচনানুসারে অন্য কোন প্রকাশ্য স্থান বা স্থানসমূহে প্রকাশ করিবেন এবং তিনি উক্ত তালিকার সত্যায়িত কপি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট প্রেরণ করিবেন এবং তিনি উহা সরকারি গেজেটে প্রকাশের ব্যবস্থা করিবেন।

(৯) সংরক্ষিত আসনের সদস্য নিবার্চনের উদ্দেশ্যে, সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা এই ধারার অধীন কোন ইউনিয়নকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ওয়ার্ডে বিভক্তিকরণের সাথে সাথে, এই ধারার বিধানাবলী অনুসরণ করিয়া, উক্ত ওয়ার্ডসমুহকে এইরূপ সমন্বিত ওয়ার্ডরূপে চিহ্নিত করিবেন যেন এইরূপ সমন্বিত ওয়ার্ডের সংখ্যা সংরক্ষিত আসন সংখ্যার সমান হয়।
   
 
   
     
   
পরিষদের এলাকা রদবদলের ফল  
১৪। (১) এই আইনের বিধান অনুযায়ী কোন পরিষদ হইতে কোন একটি এলাকা সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বাদ দেওয়া হইলে উক্ত প্রজ্ঞাপনের তারিখ হইতে উহা উক্ত পরিষদের প্রশাসনিক অধিক্ষেত্র এবং সরকার যদি অন্যরূপ নির্দেশ না দিয়া থাকে তাহা হইলে, উক্ত পরিষদে বলবৎ নিয়ম, আদেশ, নির্দেশ ও প্রজ্ঞাপনের অধীন থাকিবে না।

(২) এই আইনের বিধান অনুযায়ী কোন একটি এলাকা সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে অন্য কোন পরিষদের অর্ন্তভুক্ত করা হইলে উক্ত প্রজ্ঞাপনের তারিখ হইতে উহা উক্ত পরিষদের প্রশাসনিক অধিক্ষেত্র এবং সরকার যদি অন্যরূপ নির্দেশ না দিয়া থাকে তাহা হইলে, উক্ত পরিষদে বলবৎ নিয়ম, আদেশ, নির্দেশ ও প্রজ্ঞাপনের অধীন থাকিবে।

(৩) এই আইনের বিধান অনুযায়ী কোন একটি পরিষদের এলাকাকে দুই বা ততোধিক পরিষদে বিভক্ত করা হইলে উক্ত এলাকাসমূহকে পৃথক পৃথক পরিষদ হিসাবে পুনর্গঠিত করিতে হইবে এবং অনুরূপভাবে বিভক্ত পরিষদ নবগঠিত পরিষদের অর্ন্তভুক্ত হওয়ার তারিখ হইতে আর বিদ্যমান থাকিবে না।

(৪) এই আইনের বিধান অনুযায়ী কোন এলাকাকে কোন পরিষদের সঙ্গে একীভূত করা হইলে অথবা দুই বা ততোধিক পরিষদকে একটি মাত্র পরিষদ গঠনের জন্য একীভূত করা হইলে উক্তরূপ পুনর্গঠন দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ পরিষদ বা পরিষদসমূহের সম্পত্তি, তহবিল, দায়-দায়িত্ব, ইত্যাদি নির্ধারিত কতৃর্পক্ষ কতৃর্ক লিখিত আদেশ দ্বারা যেরূপ নির্ধারিত হইবে, সেইরূপ বিভাজন অনুসারে, নির্ধারিত পরিষদ বা পরিষদসমূহে বর্তাইবে এবং উক্তরূপ নির্ধারণ চূড়ান্ত হইবে।

(৫) উপ-ধারা (৪) অনুযায়ী প্রদত্ত কোন আদেশে উক্তরূপ পুনর্গঠন কার্যকর করিবার জন্য যেরূপ আবশ্যক হইবে সেইরূপ পরিপূরক, আনুষঙ্গিক ও পারিণামিক (Consequential) বিধানাবলী থাকিতে পারিবে; তবে উপ-ধারা (৩) অনুযায়ী বিভক্তিকরণের পর বা উপ-ধারা (৪) অনুযায়ী একীভূতকরণের পর, পরিষদ পুনর্গঠনের প্রয়োজনে-

(ক) পূবর্তন পরিষদের সদস্যগণের পদের মেয়াদ উত্তীর্ণ না হওয়া পযর্ন্ত নবগঠিত পরিষদ বা পরিষদসমূহে সাধারণ নিবার্চন অনুষ্ঠিত করা যাইবে না;

(খ) যে সকল সদস্যের পদের মেয়াদ অনুত্তীর্ণ থাকিবে সে সকল সদস্য সরকার বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের আদেশক্রমে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা সেই সকল নিবার্চনী এলাকা নিয়া গঠিত (সম্পূর্ণ বা আংশিক) পরিষদের সদস্য হিসাবে ঘোষিত হইবেন; যে সকল নিবার্চনী এলাকা হইতে উক্ত সদস্যগণ পূর্বের পরিষদসমূহে নিবার্চিত হইয়াছিলেন এবং এইরূপ যে কোন সদস্য তাঁহার পদের মেয়াদের অনুত্তীর্ণ অংশের জন্য নবগঠিত পরিষদের পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন।
   
 
   
     
   
কোন ইউনিয়ন পরিষদ বা অংশ বিশেষ পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন ইত্যাদিতে অর্ন্তভুক্তির ফল  
১৫। (১) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোন ইউনিয়ন পরিষদ বা ইহার অংশ বিশেষ পৌরসভায় বা সিটি কর্পোরেশনে রূপান্তরিত বা কোন বিদ্যমান পৌরসভায় বা সিটি কর্পোরেশনে অন্তর্ভুক্ত করিতে পারিবে :

তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত ইউনিয়ন বা ইহার অংশবিশেষকে পৌরসভা এবং সিটি কর্পোরেশন সংক্রান্ত প্রচলিত আইনে বর্ণিত শর্তসমূহ পূরণ করিতে হইবে:

আরো শর্ত থাকে যে, পৌর এলাকা বা সিটি কর্পোরেশন ঘোষণা সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হইবার পর উক্ত এলাকার সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান বা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি অনূর্ধ্ব ১ (এক) মাসের মধ্যে উক্তরূপ ঘোষণার বিরুদ্ধে সরকারের নিকট লিখিত আপত্তি উত্থাপন করিতে পারিবে; উত্থাপিত আপত্তি সম্পর্কে সরকার পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) কার্য দিবসের মধ্যে নির্ধারিত পদ্ধতিতে পৌর এলাকা বা সিটি কর্পোরেশন গঠনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবে।

(২) যদি কোন সময়ে, কোন ইউনিয়ন পরিষদের সমগ্র এলাকা উক্ত সময়ে বলবৎ কোন বিধি অনুযায়ী কোন প্রজ্ঞাপন দ্বারা কোন পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন বা কোন ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের প্রশাসনিক এলাকাভুক্ত করা হয়, তাহা হইলে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ, উক্ত প্রজ্ঞাপনের তারিখ হইতে ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে বা প্রজ্ঞাপনে যেরূপ নির্দিষ্ট হইবে সেরূপ তারিখ, বা যে তারিখে নবগঠিত সংস্থাটির নিবার্চনসমূহ সম্পন্ন হয় সে তারিখ, ইহাদের মধ্যে যাহা আগে হইবে, উক্ত তারিখ হইতে আর বিদ্যমান থাকিবে না এবং যে সকল সম্পত্তি, তহবিল ও অন্য পরিসম্পদ উক্ত পরিষদে বর্তাইয়াছিল তৎসমূহ এবং উক্ত পরিষদের সকল অধিকার ও দায়-দায়িত্ব ক্ষেত্রানুযায়ী সংশ্লিষ্ট পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের নিকট সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আদেশানুযায়ী বর্তাইবে ও হস্তান্তরিত হইবে এবং উক্ত পরিষদের অধীনে নিযু্ক্ত ব্যক্তিগণ তাঁহাদের অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে ও নিয়োগের শর্তানুযায়ী যোগ্য বিবেচিত হইলে যে তারিখে উক্ত পরিষদ আর বিদ্যমান থাকিবে না সে তারিখ হইতে সংশ্লিষ্ট পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডে নিয়োজিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।


(৩) যদি কোন সময়ে, কোন পরিষদের অংশ বিশেষ উক্ত সময়ে বলবৎ কোন বিধি অনুযায়ী কোন প্রজ্ঞাপন দ্বারা কোন পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন বা কোন ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের প্রশাসনিক এলাকাভুক্ত করা হয়, তাহা হইলে উক্ত পরিষদের অংশ, উক্ত প্রজ্ঞাপনের তারিখ হইতে ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে বা প্রজ্ঞাপনে যেরূপ নির্দিষ্ট হইবে সেইরূপ তারিখ, বা যে তারিখে নবগঠিত সংস্থাটির নির্বাচনসমূহ সম্পন্ন হয় সে তারিখ, ইহাদের মধ্যে যাহা আগে হইবে, উক্ত তারিখ হইতে হ্রাসপ্রাপ্ত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে; অনুরূপভাবে অর্ন্তভুক্তকৃত পরিষদের অংশ বিশেষের সকল সম্পত্তি, তহবিল ও অন্য পরিসম্পদ এবং উক্ত পরিষদের সকল অধিকার ও দায়-দায়িত্ব ক্ষেত্রানুযায়ী সংশ্লিষ্ট পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের নিকট সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আদেশানুযায়ী বর্তাইবে ও হস্তান্তরিত হইবে এবং সরকার অন্যরূপ নির্দেশ না দিলে, ক্ষেত্রানুযায়ী, উক্ত পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অধিক্ষেত্রাধীন (Jurisdiction) এলাকার জন্য বলবৎ সকল নিয়ম, আদেশ, নির্দেশ ও প্রজ্ঞাপন উক্ত পরিষদ এলাকার যে অংশ উক্তরূপে অর্ন্তভুক্ত হয় সে অংশের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হইবে।
   
 
   
     
   
পৌরসভা, ইত্যাদির সমগ্র বা আংশিক এলাকা নিয়া ইউনিয়ন পরিষদ গঠন  
১৬। (১) যদি সরকার মনে করে যে, কোন পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের সমগ্র এলাকা বা উহার কোন অংশ বিশেষের রূপরেখা পরিবর্তিত হইয়া গিয়াছে এবং উহার অধীনে এক বা একাধিক ইউনিয়ন পরিষদ গঠন করা প্রয়োজন, তাহা হইলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উক্ত প্রজ্ঞাপনের প্রাক-প্রকাশনার পর-

(ক) উক্তরূপ এলাকাকে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট করিয়া কোন ইউনিয়ন পরিষদে অন্তর্ভুক্ত করিতে পারিবে; বা

(খ) উক্তরূপ এলাকায় এক বা একাধিক ইউনিয়ন পরিষদ গঠন করিতে পারিবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত প্রাক-প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনটি গণ-বিজ্ঞপ্তি আকারে অন্ততঃ দুইটি বহুল প্রচারিত দৈনিক পত্রিকায় (স্থানীয়ভাবে প্রকাশিত একটি পত্রিকাসহ) এবং সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলার গুরুত্বপূর্ণ অফিস ও স্থানসমূহে প্রকাশ করিতে হইবে, যাহাতে উক্ত প্রকাশনার তারিখ হইতে ২ (দুই) মাসের মধ্যে আপত্তি উত্থাপনের আহবান জানানো হইবে এবং সরকার কর্তৃক নিযুক্ত কোন কর্তৃপক্ষ আপত্তি উত্থাপনকারী বা উত্থাপনকারীদের শুনানির সুযোগ দিয়া প্রাপ্ত আপত্তি বিবেচনা করিয়া সিদ্ধান্ত প্রদান করিবে।

(২) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী চূড়ান্ত প্রজ্ঞাপন প্রকাশনার তারিখ হইতে অনধিক ১৮০ (একশত আশি) দিনের মধ্যে প্রজ্ঞাপনে নির্দিষ্ট এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের নিবার্চন অনুষ্ঠিত হইতে হইবে এবং উক্তরূপ নিবার্চন সমাপ্তির তারিখ হইতে, উক্তরূপ এলাকা, ক্ষেত্রানুযায়ী, উক্তরূপে নির্দিষ্ট বা গঠিত ইউনিয়ন পরিষদের অন্তভুর্ক্ত বলিয়া গণ্য হইবে, এবং উক্তরূপে প্রজ্ঞাপিত এলাকা পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এর অংশ হিসেবে আর বিদ্যমান থাকিবে না।

(৩) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত এলাকা যে তারিখ হইতে ইউনিয়ন পরিষদের অন্তভুর্ক্ত করা হয় সেই তারিখ হইতে -

(ক) সংশ্লিষ্ট পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের যে এলাকা উক্তরূপে অর্ন্তভুক্ত হয় সে এলাকা সম্পর্কিত সম্পত্তি, তহবিল ও দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক যেরূপ নির্ধারিত হইবে সেইরূপ বিভাজন অনুসারে ইউনিয়ন পরিষদে বর্তাইবে ও উহার নিকট হস্তান্তরিত হইবে; এবং

(খ) উক্তরূপে অর্ন্তভুক্ত এলাকা সম্পর্কিত ব্যক্তিগণের মধ্যে যাহারা পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড কর্তৃক নিয়োজিত, তাঁহারা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত থাকিবার অভিপ্রায় ব্যক্ত করিলে বিধি অনুসারে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়োজিত হইবেন বলিয়া গণ্য হইবেন।
   
 
   
     
   
নদী ভাঙ্গন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ইত্যাদি কারণে পরিষদ পুনর্গঠন  
১৭। কোন পরিষদের অর্ন্তভুক্ত সম্পূর্ণ বা আংশিক এলাকা নদী ভাঙ্গন অথবা অন্য কোন প্রাকৃতিক দর্যোগের কারণে বিলীন বা বিলুপ্ত হইয়া গেলে সরকার, উক্ত পরিষদ বিধি অনুযায়ী বাতিল বা পুনর্গঠন করিবে এবং পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে নতুন পরিষদ গঠন না হওয়া পযর্ন্ত বিদ্যমান পরিষদ এই আইনের বিধান অনুযায়ী সকল কাযর্ক্রম পরিচালনা করিবে।
   
 
   
     
   
প্রশাসক নিয়োগ  
১৮। (১) কোন এলাকাকে ইউনিয়ন ঘোষণার পর ইহার কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য সরকার একজন উপযুক্ত কর্মকর্তাকে প্রশাসক হিসাবে নিয়োগ করিবে এবং এই আইনের বিধান মোতাবেক নির্বাচিত পরিষদ গঠন না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসক ইউনিয়ন পরিষদের যাবতীয় দায়িত্ব পালন করিবেন :

তবে শর্ত থাকে যে, উপ-ধারা (১) এর অধীন নিযুক্ত প্রশাসক ১২০ (একশত বিশ) দিনের অধিক সময় কাল দায়িত্বে থাকিতে পারিবেন না :

আরো শর্ত থাকে যে, কোন দৈব-দূর্বিপাকের কারণে এই আইনের বিধান মোতাবেক নির্বাচিত পরিষদ গঠন করা সম্ভব না হইলে সরকার উক্ত মেয়াদ অনধিক ৬০ (ষাঁট) দিন বৃদ্ধি করিতে পারিবে।

(২) সরকার প্রশাসককে কর্মসম্পাদনে সহায়তা করিবার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্য সমন্বয়ে কমিটি গঠন করিতে পারিবে।

(৩) প্রশাসক এবং কমিটির সদস্যবৃন্দ, যথাক্রমে, চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের ক্ষমতা প্রয়োগ করিবেন।
   
 
   
    চতুর্থ অধ্যায়
চেয়ারম্যান ও সদস্য নিবার্চন
   
ভোটার তালিকা ও ভোটাধিকার  
১৯। (১) প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রণীত একটি ভোটার তালিকা থাকিবে।

(২) কোন ব্যক্তি কোন ওয়ার্ডের ভোটার তালিকাভুক্ত হইবার অধিকারী হইবেন, যদি তিনি-

(ক) বাংলাদেশের একজন নাগরিক হন;

(খ) আঠারো বৎসরের কম বয়স্ক নহেন;

(গ) কোন উপযুক্ত আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ বলিয়া ঘোষিত নহেন;

(ঘ) সংশিষ্ট ওয়ার্ডের অধিবাসী বা অধিবাসী বলিয়া গণ্য হন।

(৩) কোন ব্যক্তি ভোটার তালিকায় যে ওয়ার্ডে অন্তর্ভুক্ত হইবেন, তিনি সেই ওয়ার্ডের সদস্য এবং চেয়ারম্যান নির্বাচনে ভোট প্রদান করিতে পারিবেন।
   
 
   
     
   
নির্বাচনে অংশগহণ  
[ ১৯ক। ধারা ২৬ এর বিধান সাপেক্ষে, কোন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য কোন ব্যক্তিকে কোন রাজনৈতিক দল কর্তৃক মনোনীত বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হইতে হইবে।]
   
 
   
     
   
নির্বাচন পরিচালনা, ইত্যাদি  
২০। (১) নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রণীত বিধি অনুসারে নির্বাচন কমিশন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নির্বাচনের আয়োজন, পরিচালনা ও সম্পাদন করিবে এবং অনুরূপ বিধিতে নির্বাচন কমিশন নিম্নরূপ সকল বা যে কোন বিষয়ের বিধান করিতে পারিবে, যথা :-

(ক) নির্বাচন পরিচালনার জন্য রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার নিয়োগ এবং তাহাদের ক্ষমতা ও দায়িত্ব;

(খ) প্রার্থীদের মনোনয়ন, মনোনয়নের ক্ষেত্রে আপত্তি এবং মনোনয়নপত্র বাছাই;

[ (খখ) রাজনৈতিক দল কর্তৃক মনোনীত বা স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনে অংশগ্রহণ সংক্রান্ত যে কোন বিষয়;]

(গ) প্রার্থী কর্তৃক প্রদত্ত জামানত গ্রহণ এবং উক্ত জামানত ফেরত প্রদান বা বাজেয়াপ্তকরণ;

(ঘ) প্রার্থীতা প্রত্যাহার ও প্রতীক বরাদ্দ;

(ঙ) প্রার্থীদের এজেন্ট নিয়োগ;

(চ) প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে নির্বাচন পদ্ধতি;

(ছ) ভোট গ্রহণের তারিখ, সময়, স্থান এবং নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়;

(জ) ভোটদান পদ্ধতি;

(ঝ) প্রাপ্ত ভোট বাছাই ও গণনা, ফলাফল ঘোষণা এবং সমান সংখ্যক ভোট প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অনুসরণীয় পদ্ধতি;

(ঞ) ব্যালট পেপার ও নির্বাচন সংক্রান্ত অন্যান্য কাগজপত্রের হেফাজত ও বিলি বন্টন;

(ট) যে অবস্থায় ভোট গ্রহণ স্থগিত করা যায় এবং পুনরায় ভোট গ্রহণ করা যায়;

(ঠ) প্রার্থীদের নির্বাচনী ব্যয় এবং এতদসংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়;

(ড) নির্বাচনে দুর্নীতিমূলক বা অবৈধ কার্যকলাপ এবং অন্যান্য নির্বাচনী অপরাধ এবং উহার দণ্ড এবং প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের আচরণ ও আচরণ বিধি ভংগের দণ্ড;

(ঢ) নির্বাচনী বিরোধ এবং উহার বিচার ও নিষ্পত্তি;

(ণ) অপরাধ বিচারার্থে গ্রহণ, ম্যাজিষ্ট্রেটের ক্ষমতা প্রয়োগ, মামলার মেয়াদ সংক্রান্ত বিষয়াদি;

(ত) ভোট গ্রহণের দিন নির্বাচন সংক্রান্ত দায়িত্ব পালনরত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের গ্রেফতার করার ক্ষমতা; এবং

(থ) নির্বাচন সম্পর্কিত আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়।

(২) কোন ব্যক্তি, উপ-ধারা (১) এর দফা (ড) এ উল্লিখিত-

(ক) নির্বাচনে দূর্নীতিমূলক বা অবৈধ কার্যকলাপ করিলে তিনি অন্যূন ৩ (তিন) বৎসর কারাদণ্ড অথবা অনধিক ১০ (দশ হাজার) টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন;

(খ) নির্বাচনী অপরাধ করিলে তিনি অন্যূন ৬ (ছয়) মাস এবং অনধিক ৩ (তিন) বৎসর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন; এবং

(গ) আচরণ বিধির কোন বিধান লংঘন করিলে তিনি অন্যূন ৬ (ছয়) মাস কারাদণ্ড অথবা অনধিক ১০ (দশ হাজার) টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
   
 
   
     
   
নিবার্চনী ফলাফল প্রকাশ  
২১। চেয়ারম্যান এবং সদস্য হিসাবে নিবার্চিত সকল ব্যক্তির নাম নিবার্চন কমিশন, যথাশীঘ্র সম্ভব, সরকারি গেজেটে প্রকাশ করিবে।
   
 
   
    পঞ্চম অধ্যায়
নির্বাচনী বিরোধ
   
নির্বাচনী দরখাস্ত দাখিল  
২২। (১) এই আইনের অধীনে অনুষ্ঠিত কোন নির্বাচন বা গৃহীত নির্বাচনী কার্যক্রম বিষয়ে নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল ব্যতীত কোন আদালত বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষের নিকট আপত্তি উত্থাপন করা যাইবে না।

(২) কোন নির্বাচনের প্রার্থী ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তি উক্ত নির্বাচন বা নির্বাচনী কার্যক্রম বিষয়ে আপত্তি উত্থাপন ও প্রতিকার প্রার্থনা করিয়া নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে আবেদন করিতে পারিবেন না।

(৩) এই আইনের ধারা ২৩ এর অধীন গঠিত নির্বাচন ট্রাইব্যুনালের বরাবরে নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্বাচনী অভিযোগপত্র পেশ করিতে হইবে।

(৪) কোন আদালত -

(ক) পরিষদের কোন চেয়ারম্যান বা সদস্যের নির্বাচন মুলতবী রাখিতে;

খ) এই আইন অনুযায়ী নির্বাচিত কোন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সদস্যকে তাঁহার দায়িত্ব গ্রহণে বিরত রাখিতে ;

(গ) এই আইন অনুযায়ী নির্বাচিত কোন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সদস্যকে তাঁহার কার্যলয়ে প্রবেশ করা হইতে বিরত রাখিতে-

নিষেধাজ্ঞা জারি করিতে পারিবে না।
   
 
   
     
   
নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল ও নির্বাচন আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠন  
২৩। (১) এই আইনের অধীনে নির্বাচন সম্পর্কিত বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপনের দ্বারা, একজন উপযুক্ত পদমর্যাদার বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল এবং একজন উপযুক্ত পদমর্যাদার বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা ও একজন উপযুক্ত পদমর্যাদার নির্বাহী বিভাগের কর্মকর্তার সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠন করিবে।

(২) কোন সংক্ষুদ্ধ ব্যক্তি নির্বাচিত চেয়ারম্যান বা সদস্য বা সদস্যগণের নাম সরকারী গেজেটে প্রকাশের পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে নির্বাচনী ট্রাইবুনালে নির্বাচনী দরখাস্ত দায়ের করিতে পারিবেন।

(৩) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী গঠিত ট্রাইব্যুনাল পরিষদের নির্বাচন সংক্রান্ত যে কোন দরখাস্ত, উহা দায়ের করিবার ১৮০ (একশত আশি) দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করিবে।

(৪) নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে সংক্ষুদ্ধ ব্যক্তি ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল দায়ের করিতে পারিবেন।

(৫) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী গঠিত নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনাল আপিল দায়ের করিবার ১২০ (একশত বিশ) দিনের মধ্যে উহা নিষ্পত্তি করিবে।

(৬) নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
   
 
   
     
   
নির্বাচনী দরখাস্ত ও আপিল বদলীকরণের ক্ষমতা  
২৪।নির্বাচন কমিশন নিজ উদ্যোগে অথবা পক্ষগণের কোন এক পক্ষ কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে পেশকৃত আবেদনের প্রেক্ষিতে যে কোন পর্যায়ে একটি নির্বাচনী দরখাস্ত এক ট্রাইব্যুনাল হইতে অন্য ট্রাইব্যুনালে অথবা একটি আপিল ট্রাইব্যুনাল হইতে অপর একটি আপিল ট্রাইব্যুনালে বদলী করিতে পারিবে এবং যে ট্রাইব্যুনালে বা আপিল ট্রাইব্যুনালে তাহা এইরূপ বদলী করা হয় সেই ট্রাইব্যুনাল বা আপিল ট্রাইব্যুনাল উক্ত দরখাস্ত বা আপিল যে পর্যায়ে বদলী করা হইয়াছে সেই পর্যায় হইতে উহার বিচারকার্য চালাইয়া যাইবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, নির্বাচনী দরখাস্ত যে ট্রাইব্যুনালে বদলী করা হইয়াছে সেই ট্রাইব্যুনাল উপযুক্ত মনে করিলে ইতিপূর্বে পরীক্ষিত কোন সাক্ষী পুনরায় তলব বা পুনরায় পরীক্ষা করিতে পারিবে এবং অনুরূপভাবে আপিল ট্রাইব্যুনালও এই ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবে।
   
 
   
     
   
নিবার্চনী দরখাস্ত, আপিল, ইত্যাদি নিষ্পত্তি  
২৫। নির্বাচনী দরখাস্ত ও আপিল দায়েরের পদ্ধতি, নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ও নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক নির্বাচন বিরোধ নিষ্পত্তির পদ্ধতি, এখতিয়ার, ক্ষমতা, প্রতিকার এবং আনুষঙ্গিক সকল বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
   
 
   
    ষষ্ঠ অধ্যায়
যোগ্যতা ও অযোগ্যতা
   
পরিষদের সদস্যগণের যোগ্যতা ও অযোগ্যতা  
২৬। (১) কোন ব্যক্তি এই ধারার উপ-ধারা (২) এর বিধান সাপেক্ষে পরিষদের চেয়ারম্যান বা সদস্য পদে নির্বাচিত হইবার যোগ্য হইবেন, যদি-

(ক) তিনি বাংলাদেশের নাগরিক হন;

(খ) তাঁহার বয়স পঁচিশ বৎসর পূর্ণ হয়;

(গ) চেয়ারম্যানের ক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের যে কোন ওয়ার্ডের ভোটার তালিকায় তাঁহার নাম লিপিবদ্ধ থাকে;

(ঘ) সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্যসহ অন্যান্য সদস্যদের ক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ভোটার তালিকায় তাঁহার নাম লিপিবদ্ধ থাকে।

(২) কোন ব্যক্তি চেয়ারম্যান বা সদস্য পদে নির্বাচিত হইবার এবং থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি-

(ক) তিনি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেন বা হারান;

(খ) তাঁহাকে কোন আদালত অপ্রকৃতিস্থ বলিয়া ঘোষণা করেন;

(গ) তিনি কোন আদালত কর্তৃক দেউলিয়া ঘোষিত হন এবং দেউলিয়া ঘোষিত হইবার পর দায় হইতে অব্যাহতি লাভ না করিয়া থাকেন;

(ঘ) তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোন ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অন্যূন ২ (দুই) বৎসরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তাঁহার মুক্তি লাভের পর ৫ (পাঁচ) বৎসর কাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে;

(ঙ) তিনি প্রজাতন্ত্রের বা পরিষদের বা অন্য কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কোন কর্মে লাভজনক সার্বক্ষণিক পদে অধিষ্ঠিত থাকেন;

(চ) তিনি জাতীয় সংসদের সদস্য বা অন্য কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বা সদস্য হন;

(ছ) তিনি বা তাঁহার পরিবারের উপর নির্ভরশীল কোন সদস্য সংশ্লিষ্ট পরিষদের কোন কাজ সম্পাদনের বা মালামাল সরবরাহের জন্য ঠিকাদার হন বা ইহার জন্য নিযুক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অংশীদার হন বা সংশ্লিষ্ট পরিষদের কোন বিষয়ে তাঁহার কোন প্রকার আর্থিক স্বার্থ থাকে বা তিনি সরকার কর্তৃক নিযুক্ত অত্যাবশ্যক কোন দ্রব্যের ডিলার হন;

(জ) মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার তারিখে কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হইতে কোন ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ অবস্থায় অনাদায়ী রাখেন :

তবে শর্ত থাকে যে, কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হইতে গৃহীত নিজস্ব বসবাসের নিমিত্ত গৃহ-নির্মাণ অথবা ক্ষুদ্র কৃষি ঋণ ইহার আওতাভুক্ত হইবে না ;

(ঝ) তাঁহার নিকট পরিষদ হইতে গৃহীত কোন ঋণ অনাদায়ী থাকে বা পরিষদের নিকট তাঁহার কোন আর্থিক দায়-দেনা থাকে;

(ঞ) তিনি স্থানীয় সরকার পরিষদ কিংবা সরকার কর্তৃক নিয়োগকৃত নিরীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী পরিশোধের জন্য নির্ধারিত অর্থ সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সরকার পরিষদকে পরিশোধ না করেন;

(ট) তিনি পরিষদের তহবিল তসরূফের কারণে দণ্ডপ্রাপ্ত হন;

(ঠ) তিনি এই আইনে বর্ণিত অপরাধে অথবা নির্বাচনী অপরাধ সংক্রান্ত অপরাধে সংশ্লিষ্ট আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত হইয়া অন্যুন ২(দুই) বৎসর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তাঁহার মুক্তি লাভের পর ৫ (পাঁচ) বৎসর কাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে;

(ড) তিনি কোন সরকারি বা আধাসরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, সমবায় সমিতি ইত্যাদি হইতে নৈতিক স্খলন, দুর্নীতি. অসদাচরণ ইত্যাদি অপরাধে চাকুরিচ্যুত হইয়া ৫ (পাঁচ) বৎসর অতিক্রান্ত না করেন;

(ঢ) তিনি বিগত পাঁচ বৎসরের মধ্যে যে কোন সময়ে দণ্ডবিধির ধারা ১৮৯ ও ১৯২ এর অধীন দোষী সাব্যস্ত হইয়া সাজাপ্রাপ্ত হন;

(ণ) তিনি বিগত পাঁচ বৎসরের মধ্যে যে কোন সময়ে দণ্ডবিধির ধারা ২১৩, ৩৩২, ৩৩৩ ও ৩৫৩ এর অধীন দোষী সাব্যস্ত হইয়া সাজাপ্রাপ্ত হন;

(ত) তিনি কোন আদালত কর্তৃক ফেরারী আসামী হিসাবে ঘোষিত হন;

(থ) জাতীয় বা আন্তর্জাতিক আদালত বা ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক যুদ্ধাপরাধী হিসাবে দোষী সাব্যস্ত হন।

(৩) প্রত্যেক চেয়ারম্যান ও সদস্য পদপ্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় এই মর্মে একটি হলফনামা দাখিল করিবেন যে, উপ-ধারা (২) অনুযায়ী তিনি চেয়ারম্যান বা সদস্য নির্বাচনের অযোগ্য নহেন।
   
 
   
     
   
একাধিক পদে প্রার্থীতায় বাঁধা  
২৭। (১) কোন ব্যক্তি একই সাথে চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে প্রার্থী হইতে পারিবেন না ।

(২) যদি কোন ব্যক্তি একই সাথে কোন পরিষদের একাধিক পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন, তাহা হইলে, তাহার সকল মনোনয়নপত্র বাতিল হইবে।

(৩) পরিষদের মেয়াদকালে কোন কারণে চেয়ারম্যান পদ শূন্য হইলে, কোন সদস্য চেয়ারম্যান পদে নিবার্চনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিতে পারিবেনঃ

তবে শর্ত থাকে যে, এইরূপ ক্ষেত্রে উক্ত সদস্যকে স্বীয় পদ ত্যাগ করিয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিতে হইবে।

(৪) কোন ব্যক্তি একই সংগে যে কোন স্থানীয় সরকার পরিষদের সদস্য এবং জাতীয় সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিতে পারিবেন না।
   
 
   
    সপ্তম অধ্যায়
পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ সম্পর্কিত বিধান
   
পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের শপথ বা ঘোষণা  
২৮। (১) চেয়ারম্যান ও প্রত্যেক সদস্য তাঁহার কার্যভার গ্রহণের পূর্বে প্রথম তফসিলে উল্লিখিত ফরমে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কোন ব্যক্তির সম্মুখে শপথ গ্রহণ বা ঘোষণা প্রদান করিবেন এবং শপথপত্র বা ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরদান করিবেন।

(২) চেয়ারম্যান বা সদস্য হিসাবে নির্বাচিত ব্যক্তিগণের নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হইবার ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে চেয়ারম্যান ও সকল সদস্যের শপথ গ্রহণ বা ঘোষণার জন্য সরকার বা তদ্‌কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।
   
 
   
     
   
পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের কার্যকাল  
২৯। (১) কোন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ, এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, সংশ্লিষ্ট পরিষদের প্রথম সভা অনুষ্ঠানের তারিখ হইতে ৫ (পাঁচ) বৎসর সময়ের জন্য উক্ত পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন।

(২) চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হওয়ার তারিখ হইতে পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হইতে হইবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নবগঠিত পরিষদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত না হইলে সরকার উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে সভা আহবানের জন্য দায়িত্ব অর্পণ করিতে পারিবে এবং অনুরূপভাবে অনুষ্ঠিত সভা পরিষদের প্রথম সভা হিসাবে গণ্য হইবে।

(৩) পরিষদ গঠনের জন্য কোন সাধারণ নির্বাচন ঐ পরিষদের জন্য অনুষ্ঠিত পূর্ববর্তী সাধারণ নির্বাচনের তারিখ হইতে ৫ (পাঁচ) বৎসর পূর্ণ হইবার ১৮০ (এক শত আশি) দিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হইবে।

(৪) এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ইউনিয়ন পরিষদের মেয়াদ শেষে নির্বাচনের পর উহার তিন-চতুর্থাংশ সদস্য শপথ গ্রহণ করিলে ইউনিয়নটি যথাযথভাবে গঠিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

ব্যাখ্যাঃ গঠিত পরিষদের মোট সদস্যদের তিন-চতুর্থাংশ নির্ধারণের ক্ষেত্রে ভগ্নাংশের উদ্ভব হইলে এবং তাহা দশমিক পাঁচ শুন্য শতাংশের কম হইলে অগ্রাহ্য করিতে হইবে এবং দশমিক পাঁচ শুন্য শতাংশ বা তার বেশী হইলে তাহা এক বলিয়া গণ্য করিতে হইবে।

(৫) দৈব-দুর্বিপাকজনিত বা অন্যবিধ কোন কারণে নির্ধারিত ৫ (পাঁচ) বৎসর মেয়াদের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব না হইলে, সরকার লিখিত আদেশ দ্বারা, নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত কিংবা অনধিক ৯০ (নব্বই) দিন পর্যন্ত, যাহা আগে ঘটিবে, সংশ্লিষ্ট পরিষদকে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ক্ষমতা প্রদান করিতে পারিবে।
   
 
   
     
   
দায়িত্ব হস্তান্তর  
৩০। পরিষদ গঠনের পর পূববর্তী চেয়ারম্যান বা প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য তাঁহার দখলে বা নিয়ন্ত্রণে থাকা পরিষদের সকল নগদ অর্থ, পরিসম্পদ, দলিল দস্তাবেজ, রেজিস্টার ও সীলমোহর যতশীঘ্র সম্ভব অথবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক স্থিরীকৃত তারিখ, সময় ও স্থানে নতুন নির্বাচিত চেয়ারম্যান বা, ক্ষেত্রমত, মনোনীত প্যানেল চেয়ারম্যান বা চেয়ারম্যানের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্যের নিকট পরিষদের সচিব ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মনোনীত একজন প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার উপস্থিতিতে বুঝাইয়া দিবেন।
   
 
   
     
   
ব্যত্যয়ের দণ্ড  
৩১। (১) যদি কোন চেয়ারম্যান বা চেয়ারম্যানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন সদস্য ধারা ৩০ অনুযায়ী নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর করিতে ব্যর্থ হন, তাহা হইলে তিনি ১০,০০০/- (দশ হাজার) টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডণীয় হইবেন।

(২) কোন চেয়ারম্যান বা সদস্য ধারা ২৬ (৩) অনুযায়ী তাহার অযোগ্যতা সম্পর্কে মিথ্যা হলফনামা দাখিল করিলে তিনি ৩ (তিন) বৎসর পর্যন্ত মেয়াদে কারাদণ্ড অথবা ১০,০০০/- (দশ হাজার) টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
   
 
   
     
   
চেয়ারম্যান বা সদস্যগণের পদত্যাগ  
৩২। (১) কোন সদস্য পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর তাঁহার পদত্যাগ করিবার অভিপ্রায় লিখিতভাবে ব্যক্ত করিয়া পদত্যাগ করিতে পারিবেন এবং উক্তরূপ পদত্যাগ পত্র চেয়ারম্যান কর্তৃক গৃহীত হওয়ার সাথে সাথে উক্ত সদস্যের পদ শুন্য হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে; চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট সদস্যের পদত্যাগ পত্র গৃহীত হওয়ার বিষয়টি অনধিক ৭ (সাত) দিনের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করিবেন।

(২) চেয়ারম্যান এতদুদ্দেশ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট, তাঁহার পদত্যাগ করিবার অভিপ্রায় লিখিতভাবে ব্যক্ত করিয়া পদত্যাগ করিতে পারিবেন এবং উক্ত পদত্যাগ পত্র গৃহীত হওয়ার সাথে সাথে উক্ত চেয়ারম্যানের পদ শুন্য হইবে।

(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন পদত্যাগের বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনধিক ৭ (সাত) দিনের মধ্যে পরিষদ, নির্বাচন কমিশন এবং সরকারকে অবহিত করিবেন।
   
 
   
     
   
চেয়ারম্যানের প্যানেল  
৩৩। (১) পরিষদ গঠিত হইবার পর প্রথম অনুষ্ঠিত সভার ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে অগ্রাধিকারক্রমে ৩ (তিন) সদস্যবিশিষ্ট একটি চেয়ারম্যানের প্যানেল, সদস্যগণ তাঁহাদের নিজেদের মধ্য হইতে নিবার্চন করিবেনঃ

তবে শর্ত থাকে যে, নির্বাচিত ৩(তিন) জন চেয়ারম্যান প্যানেলের মধ্যে কমপক্ষে ১ (এক) জন সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্যগণের মধ্য হইতে নির্বাচিত হইবেন।

(২) অনুপস্থিতি, অসুস্থতাহেতু বা অন্য যে কোন কারণে চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে তিনি পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত চেয়ারম্যানের প্যানেল হইতে অগ্রাধিকারক্রমে একজন সদস্য চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করিবেন।

(৩) পদত্যাগ, অপসারণ, মৃত্যুজনিত অথবা অন্য যে কোন কারণে চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হইলে নির্বাচিত নতুন চেয়ারম্যান কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত চেয়ারম্যানের প্যানেল হইতে অগ্রাধিকারক্রমে একজন সদস্য চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করিবেন।

(৪) এই আইনের বিধান অনুযায়ী চেয়ারম্যানের প্যানেলভুক্ত সদস্যগণ অযোগ্য হইলে অথবা ব্যক্তিগত কারণে দায়িত্ব পালনে অসম্মতি জ্ঞাপন করিলে পরিষদের সিদ্ধান্তক্রমে নতুন চেয়ারম্যানের প্যানেল তৈরী করা যাইবে।

(৫) উপ-ধারা (১) ও (৪) অনুযায়ী সদস্যদের মধ্য হইতে চেয়ারম্যানের প্যানেল প্রস্তুত করা না হইলে, সরকার প্রয়োজন অনুসারে, সদস্যগণের মধ্য হইতে চেয়ারম্যানের প্যানেল তৈরি করিতে পারিবে।
   
 
   
     
   
চেয়ারম্যান বা সদস্যগণের সাময়িক বরখাস্তকরণ ও অপসারণ  
৩৪। (১) যে ক্ষেত্রে কোন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সদস্যের বিরুদ্ধে উপ-ধারা (৪) এ বর্ণিত অপরাধে অপসারণের জন্য কার্যক্রম আরম্ভ করা হইয়াছে অথবা তাঁহার বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলায় অভিযোগপত্র আদালত কর্তৃক গৃহীত হইয়াছে অথবা অপরাধ আদালত কর্তৃক আমলে নেওয়া হইয়াছে, সেইক্ষেত্রে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের মতে চেয়ারম্যান অথবা সদস্য কর্তৃক ক্ষমতা প্রয়োগ পরিষদের স্বার্থের পরিপন্থী অথবা প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমীচীন না হইলে, সরকার লিখিত আদেশের মাধ্যমে চেয়ারম্যান অথবা সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীনে সাময়িকভাবে বরখাস্তের আদেশ প্রদান করা হইলে আদেশ প্রাপ্তির ৩ (তিন) দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান ধারা ৩৩ এর বিধানমতে নির্বাচিত প্যানেল চেয়ারম্যানের নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করিবেন এবং উক্ত প্যানেল চেয়ারম্যান সাময়িক বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনীত কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত অথবা চেয়ারম্যান অপসারিত হইলে তাঁহার স্থলে নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করিবেন।

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীনে পরিষদের কোন সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের আদেশ প্রদান করা হইলে উক্ত সদস্যের বিরুদ্ধে আনীত কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত অথবা উক্ত সদস্য অপসারিত হইলে তাঁহার স্থলে নতুন সদস্য নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত পরিষদের সিদ্ধান্তক্রমে অপর একজন সদস্য উক্ত দায়িত্ব পালন করিবেন।

(৪) চেয়ারম্যান বা সদস্য তাঁহার স্বীয় পদ হইতে অপসারণযোগ্য হইবেন, যদি, তিনি-

(ক) যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতিরেকে পরিষদের পর পর তিনটি সভায় অনুপস্থিত থাকেন;

(খ) পরিষদ বা রাষ্ট্রের স্বার্থের হানিকর কোন কার্যকলাপে জড়িত থাকেন, অথবা দুর্নীতি বা অসদাচরণ বা নৈতিক স্খলনজনিত কোন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া দণ্ডপ্রাপ্ত হইয়া থাকেন;

(গ) তাঁহার দায়িত্ব পালন করিতে অস্বীকার করেন অথবা শারীরিক বা মানসিক অসামর্থ্যের কারণে দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন;

(ঘ) অসদাচরণ বা ক্ষমতার অপব্যবহারের দোষে দোষী হন অথবা পরিষদের কোন অর্থ বা সম্পত্তির কোন ক্ষতি সাধন বা উহার আত্মসাতের বা অপপ্রয়োগের জন্য দায়ী হন;

(ঙ) এই আইনের ধারা ২৬ (২) অনুযায়ী নির্বাচনের অযোগ্য ছিলেন বলিয়া নির্বাচনের পর যদি প্রমাণিত হয়;

(চ) বার্ষিক ১২ (বার) টি মাসিক সভার স্থলে ন্যূনতম ৯ (নয়) টি সভা গ্রহণযোগ্য কারণ ব্যতীত অনুষ্ঠান করিতে ব্যর্থ হন;

(ছ) নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব দাখিল না করেন কিংবা দাখিলকৃত হিসাবে অসত্য তথ্য প্রদান করেন; অথবা

(জ) বিনা অনুমতিতে দেশ ত্যাগ করেন অথবা অনুমতিক্রমে দেশ ত্যাগের পর সেখানে অননুমোদিতভাবে অবস্থান করেন।

ব্যাখ্যাঃ এই উপ-ধারায় 'অসদাচরণ' বলিতে ক্ষমতার অপব্যবহার, কর্তব্যে অবহেলা, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও ইচ্ছাকৃত কুশাসনও বুঝাইবে।

(৫) সরকার বা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ, সরকারি গেজেটে আদেশ দ্বারা, উপ-ধারা (৪) এ উল্লিখিত এক বা একাধিক কারণে চেয়ারম্যান বা সদস্যকে অপসারণ করিতে পারিবে :

তবে শর্ত থাকে যে, অপসারণের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করিবার পূর্বে বিধি মোতাবেক তদন্ত করিতে হইবে ও অভিযুক্তকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হইবে।

(৬) কোন চেয়ারম্যান বা সদস্য এর অপসারণের প্রস্তাব, সরকার বা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদন লাভের পর তিনি তাৎক্ষণিকভাবে অপসারিত হইবেন।

(৭) পরিষদের কোন চেয়ারম্যান বা সদস্যকে উপ-ধারা (৫) অনুযায়ী তাঁহার পদ হইতে অপসারণ করা হইলে তিনি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট উক্ত আদেশের তারিখ হইতে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে আপিল করিতে পারিবেন এবং আপিল কর্তৃপক্ষ উক্ত আপিলটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অপসারণ আদেশটি স্থগিত রাখিতে পারিবেন এবং আপিলকারীকে বক্তব্য প্রদানের সুযোগ দানের পর উক্ত আদেশটি পরিবর্তন, বাতিল বা বহাল রাখিতে পারিবেন।

(৮) আপিল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক উপ-ধারা (৭) এর অধীন প্রদত্ত আদেশ চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।

(৯) এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই ধারা অনুযায়ী অপসারিত কোন ব্যক্তি কোন পদে সংশ্লিষ্ট পরিষদের কার্যকালের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হইবার যোগ্য হইবেন না।
   
 
   
     
   
চেয়ারম্যান বা সদস্য পদ শূন্য হওয়া  
৩৫। (১) চেয়ারম্যান বা কোন সদস্যের পদ শূন্য হইবে, যদি-

(ক) তিনি ধারা ২৬ (২) অনুযায়ী চেয়ারম্যান বা সদস্য হইবার অযোগ্য হইয়া পড়েন;

(খ) তিনি ধারা ৩৪ অনুযায়ী সাময়িকভাবে বরখাস্ত হন বা অপসারিত হন;

(গ) তিনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ধারা ২৮ (১) এ বর্ণিত শপথ গ্রহণ করিতে ব্যর্থ হন;

(ঘ) তিনি ধারা ৩২ এর অধীন পদত্যাগ করেন;

(ঙ) তিনি মৃত্যুবরণ করেন; অথবা

(চ) ধারা ৩৯ অনুযায়ী তাহার বিরুদ্ধে সরকার কর্তৃক অনাস্থা প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।

(২) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী চেয়ারম্যান বা কোন সদস্যের পদ শূন্য হইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করিয়া পদটি শূন্য ঘোষণা করিবেন।
   
 
   
     
   
শূন্য পদ পূরণ  
৩৬। যদি কোন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সদস্যের পদ তাঁহার মৃত্যু, পদত্যাগ, অপসারণ বা অন্যবিধ কারণে তাঁহার মেয়াদ পূর্তির কমপক্ষে ১৮০ (একশত আশি) দিন পূর্বে শূন্য হয়, তাহা হইলে, উক্ত শূন্যতার তারিখ হইতে ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে অবশিষ্ট সময়ের জন্য শূন্য পদে নির্বাচন অনুষ্ঠান করিতে হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, দৈব দুর্বিপাক জনিত কারণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হইলে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের জন্য সুবিধাজনক তারিখ নির্ধারণ করিতে পারিবে।
   
 
   
     
   
সদস্যপদ পুনর্বহাল  
৩৭। পরিষদের কোন নির্বাচিত চেয়ারম্যান বা সদস্য এই আইনের বিধান অনুযায়ী সাময়িকভাবে বরখাস্ত বা অপসারিত হইয়া অথবা অযোগ্য ঘোষিত হইয়া সদস্যপদ হারাইবার পর আপিলে তাঁহার উক্তরূপ সাময়িক বরখাস্ত আদেশ বা অপসারণ আদেশ রদ বা বাতিল বা প্রত্যাহার হইলে বা তাঁহার অযোগ্যতা অবলোপন হইলে, তাহার সদস্যপদ পুনর্বহাল হইবে এবং তিনি অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য স্ব-পদে বহাল হইবেন।
   
 
   
     
   
চেয়ারম্যান বা সদস্যগণের অধিকার ও দায়বদ্ধতা  
৩৮। (১) পরিষদের চেয়ারম্যান বা প্রত্যেক সদস্যের এই আইন ও সংশ্লিষ্ট বিধানাবলী সাপেক্ষে পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের অধিকার থাকিবে।

(২) পরিষদের প্রত্যেক সদস্য নির্ধারিত পদ্ধতিতে পরিষদের চেয়ারম্যান অথবা সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটির সভাপতির নিকট পরিষদের বা স্থায়ী কমিটির প্রশাসনিক এখতিয়ারভুক্ত বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন বা কৈফিয়ৎ দাবী করিতে পারিবেন।

(৩) পরিষদের চেয়ারম্যানের নিকট নোটিশ প্রদান করিয়া পরিষদের যে কোন সদস্য অফিস চলাকালীন সময়ে, গোপনীয় নথিপত্র ব্যতীত, রেকর্ড ও নথিপত্র দেখিতে পারিবেন।

(৪) পরিষদের চেয়ারম্যান বা প্রত্যেক সদস্য পরিষদ বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়িত কোন কাজ বা প্রকল্পের ত্রুটি-বিচ্যুতি সম্পর্কে পরিষদের মনোযোগ আকর্ষণ করিতে পারিবেন।

(৫) পরিষদের চেয়ারম্যান, স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং সদস্যগণ এই আইনের বিধান অনুযায়ী জনস্বার্থে পরিষদের কার্য পরিচালনা করিবেন এবং পরিষদের নিকট যৌথভাবে দায়ী থাকিবেন।

(৬) সংরক্ষিত আসনের সদস্য এবং সাধারন আসনের সদস্যদের দায়িত্ব এবং কার্যাবলী বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

 
   
 
   
     
   
অনাস্থা প্রস্তাব  
৩৯। (১) এই ধারার বিধান সাপেক্ষে পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য বা পরিষদের উপর সুনির্দিষ্ট অভিযোগে অনাস্থা প্রস্তাব আনয়ন করা যাইবে।

(২) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী অনাস্থা প্রস্তাব পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের স্বাক্ষরে লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট পরিষদের যে কোন একজন সদস্য ব্যক্তিগতভাবে দাখিল করিবেন।

(৩) অনাস্থা প্রস্তাব প্রাপ্তির পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ১০ (দশ) কার্যদিবসের মধ্যে একজন কর্মকর্তা নিয়োগ করিবেন এবং উক্ত কর্মকর্তা অভিযোগসমূহের বিষয়ে বক্তব্য প্রদানের জন্য ১০ (দশ) কার্যদিবসের সময় প্রদান করিয়া অভিযুক্ত চেয়ারম্যান বা সদস্যকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিবেন।

(৪) জবাব সন্তোষজনক বিবেচিত না হইলে উপ-ধারা (৩) অনুযায়ী নিযুক্ত কর্মকর্তা জবাব প্রাপ্তির অনধিক ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে অনাস্থা প্রস্তাবে যে সকল অভিযোগের বর্ণনা করা হয়েছে, সে সকল অভিযোগ তদন্ত করিবেন।

(৫) তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হইলে উপ-ধারা (৩) অনুযায়ী নিযুক্ত কর্মকর্তা অনধিক ১৫ (পনের) কার্যদিবসের মধ্যে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান বা সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সকল নিবার্চিত সদস্যের নিকট সভার নোটিশ প্রেরণ নিশ্চিতকরণপূর্বক পরিষদের বিশেষ সভা আহবান করিবেন।

(৬) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের ক্ষেত্রে প্যানেল চেয়ারম্যান (ক্রমানুসারে) এবং কোন সদস্যের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের ক্ষেত্রে পরিষদের চেয়ারম্যান সভায় সভাপতিত্ব করিবেনঃ

তবে শর্ত থাকে যে, চেয়ারম্যান বা প্যানেল চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে উপস্থিত সদস্য্যগণের মধ্যে একজন সদস্যকে ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে সভাপতি নিবার্চিত করা যাইবে।

(৭) উপ-ধারা (৩) অনুযায়ী নিযুক্ত কর্মকর্তা সভায় একজন পর্যবেক্ষক হিসাবে উপস্থিত থাকিবেন।

(৮) উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্যে আহুত সভাটি নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কোন কারণ ছাড়া স্থগিত করা যাইবে না এবং মোট নির্বাচিত সদস্য সংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য সমন্বয়ে সভার কোরাম গঠিত হইবে।

(৯) সভা শুরু হইবার তিন ঘন্টার মধ্যে উন্মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভব না হইলে অনাস্থা প্রস্তাবটির উপর গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করিতে হইবে।

(১০) সভার সভাপতি অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে বা বিপক্ষে কোন প্রকাশ্য মতামত প্রকাশ করিবেন না তবে তিনি ব্যালটের মাধ্যমে উপ-ধারা (৯) অনুযায়ী ভোট প্রদান করিতে পরিবেন কিন্তু তিনি নির্ণায়ক বা দ্বিতীয় ভোট দিতে পারিবেন না।

(১১) অনাস্থা প্রস্তাবটি কমপক্ষে ৯ (নয়) জন সদস্য কর্তৃক ভোটে গৃহীত হইতে হইবে।

(১২) উপ-ধারা (৩) অনুযায়ী নিযুক্ত কর্মকর্তা সভা শেষ হইবার পর অনাস্থা প্রস্তাবের কপি, ব্যালট পেপার, ভোটের ফলাফলসহ সভার কার্যবিবরণী প্রস্তুত করিয়া আনুষঙ্গিক কাগজপত্রসহ সরকারের নিকট প্রেরণ করিবেন।

(১৩) সরকার, উপযুক্ত বিবেচনা করিলে, অনাস্থা প্রস্তাব অনুমোদন অথবা অননুমোদন করিবে।

(১৪) অনাস্থা প্রস্তাবটি প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোটে গৃহীত না হইলে অথবা কোরামের অভাবে সভা অনুষ্ঠিত না হইলে উক্ত তারিখের পর ৬ (ছয়) মাস অতিক্রান্ত না হইলে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান বা সদস্যের বিরুদ্ধে অনুরূপ কোন অনাস্থা প্রস্তাব আনয়ন করা যাইবে না।

(১৫) পরিষদের চেয়ারম্যান বা কোন সদস্যের দায়িত্বভার গ্রহণের ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে তাহার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনয়ন করা যাইবে না।
   
 
   
     
   
চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের ছুটি  
৪০। কোন চেয়ারম্যান বা কোন সদস্যকে পরিষদ যুক্তিসঙ্গত কারণে ১ (এক) বৎসরে সর্বোচ্চ ৩ (তিন) মাস ছুটি মঞ্জুর করিতে পারিবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, ৩ (তিন) মাসের অধিক ছুটি প্রয়োজন হইলে সরকারের অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবেঃ

আরো শর্ত থাকে যে, মহিলা চেয়ারম্যান বা সদস্যের মাতৃত্বকালীন ছুটি ভোগের ক্ষেত্রে সরকারি বিধি বিধান প্রযোজ্য হইবে।
   
 
   
     
   
সম্পত্তি সম্পর্কিত ঘোষণা  
৪১। চেয়ারম্যান ও সদস্য তাঁহার কার্যভার গ্রহণের পূর্বে তাঁহার এবং তাঁহার পরিবারের কোন সদস্যের স্বত্ব, দখল বা স্বার্থ আছে এই প্রকার যাবতীয় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির একটি লিখিত বিবরণ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে ও নির্ধারিত ব্যক্তির নিকট দাখিল করিবেন।

ব্যাখ্যা।-"পরিবারের সদস্য" বলিতে চেয়ারম্যান ও সদস্যের স্বামী বা স্ত্রী এবং তাঁহার সংগে বসবাসকারী এবং তাঁহার উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল তাঁহার ছেলে-মেয়ে, পিতা, মাতা ও ভাই-বোনকে বুঝাইবে।
   
 
   
    অষ্টম অধ্যায়
পরিষদের সভা, ক্ষমতা ও কার্যাবলী
   
পরিষদের সভা  
৪২। (১) প্রত্যেক পরিষদ, পরিষদের কার্যালয়ে প্রতি মাসে অন্যূন একটি সভা অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করিবে এবং উক্ত সভা অফিস সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত হইবে।

(২) পরিষদের ৫০% সদস্য তলবী সভা আহবানের জন্য চেয়ারম্যানের নিকট লিখিত অনুরোধ জানাইলে তিনি ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে অনুষ্ঠেয় একটি সভার তারিখ ও সময় নির্ধারণ করিয়া সভা অনুষ্ঠানের অন্যূন ৭ (সাত) দিন পূর্বে পরিষদের সদস্যগণকে নোটিশ প্রদান করিবেন।

(৩) পরিষদের চেয়ারম্যান উপ-ধারা (২) অনুযায়ী তলবী সভা আহবান করিতে ব্যর্থ হইলে প্যানেল চেয়ারম্যান (ক্রমানুসারে) ১০ (দশ) দিনের মধ্যে অনুষ্ঠেয় সভা আহবান করিয়া অন্যূন ৭ (সাত) দিন পূর্বে পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণকে নোটিশ প্রদান করিবেন; উক্তরূপ সভা পরিষদের কার্যালয়ে নির্ধারিত তারিখে অফিস চলাকালীন সময়ে অনুষ্ঠিত হইবে।

(৪) তলবী সভা পরিচালনাকালীন সময়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক নিয়োগকৃত একজন কর্মকর্তা পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত থাকিতে পারিবেন, যিনি উক্তরূপ তলবী সভা পরিচালনা ও সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট একটি লিখিত প্রতিবেদন সভা অনুষ্ঠানের ৭ (সাত) দিনের মধ্যে দাখিল করিবেন।

(৫) চেয়ারম্যান অথবা তাঁহার অনুপস্থিতিতে তাঁহার দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তি, প্রয়োজনে, যে কোন সময় পরিষদের বিশেষ সভা আহবান করিতে পারিবেন।

(৬) সদস্যগণের মোট সংখ্যার এক তৃতীয়াংশের উপস্থিতিতে কোরাম হইবে, তবে কোরামের অভাবে কোন সভা মুলতবী হইলে মুলতবী সভায় কোন কোরামের প্রয়োজন হইবে না।

(৭) এই আইনে ভিন্নরূপ বিধান না থাকিলে, পরিষদের সভায় সকল সিদ্ধান্ত উপস্থিত সদস্যগণের সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে গৃহীত হইবে।

(৮) প্রত্যেক সদস্যের একটি করিয়া ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভাপতি একটি দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদান করিতে পারিবেন।

(৯) পরিষদের সভায় চেয়ারম্যান অথবা তাঁহার অনুপস্থিতিতে অগ্রাধিকারের ক্রমানুসারে চেয়ারম্যান প্যানেলের সদস্য অথবা উভয়ের অনুপস্থিতিতে, উপস্থিত সদস্যগণ কর্তৃক নির্বাচিত কোন সদস্য সভাপতিত্ব করিবেন।

(১০) সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে নির্ধারিত কর্মকর্তাগণ পরিষদের আমন্ত্রণে পরিষদের সভায় যোগদান এবং সভার আলোচনায় অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন, তবে তাহাদের ভোটাধিকার থাকিবে না।

(১১) কোন্ প্রস্তাব সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে গৃহীত হইয়াছে বা হয় নাই তাহা সভাপতি উক্ত সভায় স্পষ্ট করিয়া জানাইয়া দিবেন।

(১২) সভার আলোচ্যসূচিতে কারিগরি ও গুরুত্বপুর্ণ বিষয়ে কোনো বিশেষজ্ঞের মতামত প্রয়োজন হইলে পরিষদ উক্ত বিষয় বা বিষয়সমূহের উপর মতামত প্রদানের জন্য এক বা একাধিক বিশেষজ্ঞকে সভায় আমন্ত্রণ জানাইতে পারিবে।
   
 
   
     
   
পরিষদের সভায় সম্পাদনীয় কার্য তালিকা  
৪৩। পরিষদের কোন মূলতবী সভা ব্যতীত পরিষদের অন্য প্রত্যেক সভায় সম্পাদনীয় কার্যাবলীর একটি তালিকা, উক্তরূপ সভার জন্য নির্ধারিত সময়ের অন্যূন ৭ (সাত) দিন পূর্বে পরিষদের প্রত্যেক সদস্যের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে এবং সভায় উপস্থিত সদস্যগণের সংখ্যাগরিষ্ঠের অনুমোদন ব্যতীত, উক্তরূপ তালিকা বহির্ভূত কোন বিষয় সভায় আলোচনার জন্য আনীত হইবে না বা সম্পাদিত হইবে না; তবে, যদি চেয়ারম্যান মনে করেন যে, এইরূপ পরিস্থিতির উদ্ভব হইয়াছে যাহার জন্য পরিষদের একটি জরুরি সভা আহবান করা সমীচীন, তাহা হইলে, তিনি সদস্যগণকে অন্যূন ৩ (তিন) দিনের নোটিশ প্রদানের পর এইরূপ একটি সভা আহবান করিতে পারিবেন এবং উক্তরূপ সভায় নির্ধারিত আলোচ্যসূচী ব্যতীত অন্য কোন বিষয় আলোচনা করা যাইবে না।
   
 
   
     
   
পরিষদের কার্যাবলী নিষ্পন্ন  
৪৪। (১) পরিষদের সকল কার্যাবলী বিধি দ্বারা নির্ধারিত সীমার মধ্যে ও পদ্ধতিতে পরিষদের সভায় অথবা স্থায়ী কমিটিসমূহের সভায় অথবা উহার চেয়ারম্যান, সদস্য, কর্মকর্তা বা কর্মচারী কর্তৃক নিষ্পন্ন হইবে।

(২) কোন পদ শূন্য থাকিলে বা পরিষদের গঠন প্রক্রিয়ায় কোন ত্রুটি রহিয়াছে কিংবা পরিষদের বৈঠকে উপস্থিত হইবার বা ভোটদানে বা অন্য উপায়ে ইহার কাযর্ধারায় অংশগ্রহণে অধিকার না থাকা সত্ত্বেও কোন ব্যক্তি অনুরূপ কার্য করিয়াছেন কেবল এই কারণে পরিষদের কোন কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না।

(৩) পরিষদের প্রত্যেক সভার কার্যবিবরণী এই উদ্দেশ্যে সংরক্ষিত একটি বইয়ে লিপিবদ্ধ করিতে হইবে।

(৪) সভার কার্যবিবরণী স্বাক্ষরিত হইবার পর যথাশীঘ্র সম্ভব পরিষদের সকল সিদ্ধান্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট প্রেরণ করিয়া অনুলিপি ডেপুটি কমিশনারের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে।
   
 
   
     
   
স্থায়ী কমিটি গঠন ও উহার কার্যাবলী  
৪৫। (১) পরিষদ উহার কার্যাবলী সুচারুরূপে সম্পাদন করিবার জন্য নিম্নবর্ণিত বিষয়াদির প্রত্যেকটি সম্পর্কে একটি করিয়া স্থায়ী কমিটি গঠন করিবে,যথাঃ-

(ক) অর্থ ও সংস্থাপন;

(খ) হিসাব নিরীক্ষা ও হিসাব রক্ষণ;

(গ) কর নিরুপন ও আদায়;

(ঘ) শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা;

(ঙ) কৃষি, মৎস্য ও পশু সম্পদ ও অন্যান্য অর্থনৈতিক উন্নয়নমূলক কাজ;

(চ) পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন, সংরক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ, ইত্যাদি;

(ছ) আইন-শৃংখলা রক্ষা;

(জ) জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন;

(ঝ) স্যানিটেশন, পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিস্কাশন;

(ঞ) সমাজকল্যাণ ও দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা;

(ট) পরিবেশ উন্নয়ন, পরিবেশ সংরক্ষণ ও বৃক্ষরোপণ;

(ঠ) পারিবারিক বিরোধ নিরসন, নারী ও শিশু কল্যাণ (পাবর্ত্য চট্রগ্রামের অধিবাসীদের জন্য প্রযোজ্য হইবে না);

(ড) সংস্কৃতি ও খেলাধুলা।

(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত স্থায়ী কমিটি ব্যতীত পরিষদ, এই আইনের বিধান সাপেক্ষে, প্রয়োজনে, ডেপুটি কমিশনারের অনুমোদনক্রমে, অতিরিক্ত স্থায়ী কমিটি গঠন করিতে পারিবে।

(৩) স্থায়ী কমিটির সভাপতি কো-অপট সদস্য ব্যতীত পরিষদের সদস্যগণের মধ্য হইতে নির্বাচিত হইবেন এবং মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আসন হইতে নির্বাচিত সদস্যগণ অন্যূন এক-তৃতীয়াংশ স্থায়ী কমিটির সভাপতি থাকিবেনঃ

তবে শর্ত থাকে যে, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শুধুমাত্র আইন শৃংখলা বিষয়ক কমিটির সভাপতি থাকিবেন।

(৪) স্থায়ী কমিটি পাঁচ হইতে সাত সদস্য বিশিষ্ট হইবে এবং কমিটি প্রয়োজনে, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কোন একজন ব্যক্তিকে কমিটির সদস্য হিসাবে কো-অপট করিতে পারিবে, তবে কো-অপট সদস্যের কোন ভোটাধিকার থাকিবে না।

(৫) অন্যান্য সদস্যগণ স্থানীয় জনসাধারণের মধ্য হইতে সংশ্লিষ্ট কমিটিতে অবদান রাখিবার যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের মধ্য হইতে মনোনীত হইবেন।

(৬) স্থায়ী কমিটির সুপারিশ পরিষদের পরবর্তী সভায় বিবেচনার পর গৃহীত হইবে; তবে কোন সুপারিশ ইউনিয়ন পরিষদে গৃহীত না হইলে তাহার যথার্থতা ও কারণ লিখিতভাবে স্থায়ী কমিটিকে জানাইতে হইবে।

(৭) স্থায়ী কমিটির সকল কার্যধারা পরিষদের সাধারণ সভার অনুমোদন সাপেক্ষে চূড়ান্ত হইবে।

(৮) নিম্নলিখিত কারণে পরিষদ কোন স্থায়ী কমিটি ভাঙ্গিয়া দিতে পারিবে, যথা :-

(ক) বিধি মোতাবেক নিয়মিত সভা আহবান করিতে না পারিলে;

(খ) নির্ধারিত ক্ষেত্রে ক্রমাগতভাবে পরিষদকে পরামর্শ প্রদানে ব্যর্থ হইলে; অথবা

(গ) এই আইন বা অন্য কোন আইনের বিধান বহির্ভূত কোন কাজ করিলে।

(৯) প্রত্যেক স্থায়ী কমিটি প্রতি দুইমাস অন্তর সভায় মিলিত হইবে, তবে প্রয়োজনে অতিরিক্ত সভা অনুষ্ঠান করিতে পারিবে।

(১০) স্থায়ী কমিটির কার্যাবলী প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে, তবে উক্তরূপ প্রবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত পরিষদের সাধারণ সভায় স্থায়ী কমিটির কার্যাবলী নিরূপন করা যাইবে।
   
 
   
     
   
পরিষদের নির্বাহী ক্ষমতা  
৪৬। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য সাধন এবং পরিষদের সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নকল্পে চেয়ারম্যান পরিষদের নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করিবেন।

(২) এই আইনের অন্যান্য ধারায় বর্ণিত বিষয়সমূহকে ক্ষুণ্ন না করিয়া চেয়ারম্যান নিম্নরূপ দায়িত্বসমূহ পালন করিবেন, যথা :-

(ক) তিনি পরিষদের সভায় সভাপতিত্ব করিবেন এবং সভা পরিচালনা করিবেন;

(খ) পরিষদের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাজ কর্ম তদারকী ও নিয়ন্ত্রণ করিবেন এবং তাঁহাদের গোপনীয় প্রতিবেদন প্রস্তুত করিবেন;

(গ) সরকার বা নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত ব্যয় সীমা পর্যন্ত ব্যয় নির্বাহ করিবেন;

(ঘ) তিনি বা পরিষদের সচিবের যৌথ স্বাক্ষরে পরিষদের সকল আয় ব্যয়ের হিসাব পরিচালনা করিবেন;

(ঙ) পরিষদের ব্যয় মিটানো এবং পাওনা আদায়ের জন্য কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে ক্ষমতা অর্পণ করিবেন;

(চ) এই আইনের অধীন প্রয়োজনীয় সকল বিবরণী ও প্রতিবেদন প্রস্তুত করিবেন;

(ছ) এই আইন বা বিধি দ্বারা আরোপিত অন্যান্য ক্ষমতা ও দায়িত্ব পালন করিবেন।

(৩) চেয়ারম্যান, পরিষদের অনুমোদন সাপেক্ষে, আইন, অধ্যাদেশ বা বিধি-বিধান এর পরিপন্থী নয়, এইরূপ জনস্বার্থ বা জনগুরুত্বপূর্ণ কোন জরুরি কাজ সম্পাদনের জন্য নির্দেশ দিতে পারিবেন, এবং এই ধরনের কার্য সম্পাদনের ব্যয়ভার পরিষদ তহবিল হইতে বহনের নির্দেশ দিতে পারিবেন।

(৪) উপ-ধারা (৩) অনুযায়ী গৃহীত কার্যক্রম সম্পর্কে চেয়ারম্যান পরিষদের পরবর্তী সভায় প্রতিবেদন উপস্থাপন করিবেন এবং উক্ত প্রতিবেদন পরিষদের সভায় অনুমোদিত হইতে হইবে।

(৫) উপ-ধারা (১), (২),(৩) ও (৪) এ বর্ণিত দায়িত্ব ছাড়াও পরিষদের চেয়ারম্যান নিম্নবর্ণিত ক্ষমতা প্রয়োগ করিবেন, যথা :-

(ক) তিনি পরিষদের সভায় পরিষদের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণ ও অন্যান্য সরকারি দপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণের উপস্থিতি নিশ্চিত করিবেন;

(খ) এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধির পরিপন্থী এবং প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলার কারণে সচিব এবং হস্তান্তরিত অন্যান্য দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারী ব্যতীত পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন অন্যান্য কর্মচারীগণকে প্রয়োজনে যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করিয়া সাময়িক বরখাস্ত করিতে পারিবেন:

তবে শর্ত থাকে যে, পরিষদের পরবর্তী সাধারণ সভায় উক্তরূপ সাময়িক বরখাস্ত অনুমোদিত হইতে হইবে অন্যথায় উহা কার্যকর হইবে না;

(গ) পরিষদের সচিবের নিকট হইতে পরিষদের প্রশাসনিক বিষয় সংক্রান্ত যে কোন ক্লাসিফাইড রেকর্ড বা নথি লিখিতভাবে তলব করিতে এবং আইন ও নির্ধারিত পদ্ধতিতে আদেশ প্রদান করিতে পারিবেন; তবে তিনি এইরূপ কোন ক্লাসিফাইড রেকর্ড বা নথি তলব করিতে পারিবেন না, যাহা সম্পূর্ণরূপে সচিব বা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার নিজস্ব তত্ত্বাবধানে থাকিবে;

(ঘ) এই আইন বা বিধি, প্রবিধান, ইত্যাদির পরিপন্থী এবং প্রশাসনিক বিশৃংখলা সৃষ্টির কারণে ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন অন্যান্য কর্মচারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রতিবেদন প্রেরণ করিতে পারিবেন;

(ঙ) তাঁহার বিবেচনায় পরিষদের কোন সিদ্ধান্ত এই আইন বা অন্য কোন আইন বা বিধি-বিধানের পরিপন্থী হইলে, অথবা উক্তরূপ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হইলে উহা জনস্বাস্থ্য, জনস্বার্থ ও জননিরাপত্তা বিপন্ন করিবে বলিয়া বিবেচিত হইলে, তিনি উহা সরকারের নিকট প্রেরণ করিবেন।

(৬) পরিষদের নির্বাহী বা অন্য কোন কার্য পরিষদের নামে গৃহীত হইয়াছে বলিয়া প্রকাশ করা হইবে এবং উহা নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রমাণিকৃত হইতে হইবে।

(৭) পরিষদের দৈনন্দিন সেবা প্রদানমূলক দায়িত্ব ত্বরান্বিত করিবার লক্ষ্যে কর্মকর্তাদের মধ্যে নির্বাহী ক্ষমতা বিভাজনের প্রস্তাব পরিষদের সভায় অনুমোদিত হইতে হইবে এবং, প্রয়োজনবোধে, সময়ে সময়ে, ইহা সংশোধনের এখতিয়ার পরিষদের থাকিবে।
   
 
   
     
   
পরিষদের কাযাবর্লী  
৪৭। (১) পরিষদের প্রধান কার্যাবলী হইবে নিম্নরূপ, যথা:-

ক) প্রশাসন ও সংস্থাপন বিষয়াদি;

(খ) জনশৃংখলা রক্ষা;

(গ) জনকল্যাণমূলক কার্য সম্পর্কিত সেবা; এবং

(ঘ) স্থানীয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন সম্পর্কিত পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন।

(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত প্রধান কার্যাবলীর উপর ভিত্তি করিয়া পরিষদের কার্যাবলী দ্বিতীয় তফসিলে বর্ণিত হইল।

(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এ যাহাই থাকুক না কেন, বিশেষ করিয়া, এবং উক্তরূপ উপ-ধারাসমূহের সামগ্রিকতাকে ক্ষুণ্ন না করিয়া, সরকার সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্যদের দায়িত্ব ও কর্তব্য বিধি দ্বারা নির্ধারণ করিতে পারিবে। তবে ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন প্রকল্পের (টি,আর,কাবিখা, থোক বরাদ্দ ও অন্যান্য) সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের এক তৃতীয়াংশ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্যকে অর্পণ করিতে হইবে।
   
 
   
     
   
ইউনিয়ন পরিষদের পুলিশ ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বিষয়ক কার্যাবলী  
৪৮। (১) সরকার, সময়ে সময়ে, চাহিদা মোতাবেক গ্রামীণ এলাকায় গ্রাম পুলিশ বাহিনী গঠন করিতে পারিবে এবং সরকার কর্তৃক উক্ত গ্রাম পুলিশ বাহিনী নিয়োগ, প্রশিক্ষণ, শৃংখলা এবং চাকুরির শর্তাবলী নিধারর্ণ করা হইবে।

(২) সরকার যেরূপ নির্দেশ প্রদান করিবে গ্রাম পুলিশ সেইরূপ ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন করিবে।

(৩) ডেপুটি কমিশনারের নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে, কোন ইউনিয়ন বা তাহার অংশ বিশেষে জননিরাপত্তা ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বিষয়ে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন রহিয়াছে সেই ক্ষেত্রে উক্ত এলাকার প্রাপ্তবয়স্ক সক্ষম ব্যক্তিগণকে আদেশে উল্লিখিত পদ্ধতিতে গণপাহারায় নিয়োজিত করিতে পারিবে।

(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন আদেশ জারি করা হইলে পরিষদ আদেশে উল্লিখিত ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন করিবে।
   
 
   
     
   
নাগরিক সনদ প্রকাশ  
৪৯। (১) এই আইনের অধীন গঠিত প্রতিটি পরিষদ, নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণ করিয়া বিভিন্ন প্রকারের নাগরিক সেবা প্রদানের বিবরণ, সেবা প্রদানের শর্তসমূহ এবং নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সেবা প্রদান নিশ্চিত করিবার বিবরণ প্রকাশ করিবে যাহা "নাগরিক সনদ"(Citizen Charter) বলিয়া অভিহিত হইবে।

(২) সরকার পরিষদের জন্য আদর্শ নাগরিক সনদ সংক্রান্ত নির্দেশিকা প্রণয়ন করিবে এবং পরিষদ আইন ও বিধি সাপেক্ষে, এ নির্দেশিকার প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করিবার ক্ষমতা রাখিবে :

তবে শর্ত থাকে যে, এই ধরনের পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করা হইলে, তাহা অবগতির জন্য সরকারকে অবহিত করিতে হইবে।

(৩) নাগরিক সনদ সময়ে সময়ে হাল নাগাদ করিতে হইবে।

(৪) নাগরিক সনদ সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নে নিম্নবর্ণিত বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকিবে, যথা :-

(ক) প্রতিটি সেবার নির্ভুল ও স্বচ্ছ বিবরণ;

(খ) সেবা প্রদানের মূল্য;

(গ) সেবা গ্রহণ ও দাবি করা সংক্রান্ত যোগ্যতা ও প্রক্রিয়া;

(ঘ) সেবা প্রদানের নির্দিষ্ট সময়সীমা;

(ঙ) সেবা সংক্রান্ত বিষয়ে নাগরিকদের দায়িত্ব;

(চ) সেবা প্রদানের নিশ্চয়তা;

(ছ) সেবা প্রদান সংক্রান্ত অভিযোগ নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া; এবং

(জ) সনদে উল্লিখিত অঙ্গীকার লংঘনের ফলাফল।
   
 
   
     
   
উন্নততর তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ও সুশাসন  
৫০। (১) প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদ সুশাসন নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে উন্নততর তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার আর্থিক ও কারিগরি সাহায্যসহ অন্যান্য সহায়তা প্রদান করিবে।

(৩) পরিষদ নাগরিক সনদে বর্ণিত আধুনিক সেবা সংক্রান্ত বিষয়সহ সরকারিভাবে প্রদত্ত সকল সেবার বিবরণ উন্নততর তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে নাগরিকদের জ্ঞাত করিবার ব্যবস্থা করিবে।
   
 
   
    নবম অধ্যায়
পরিষদের আর্থিক ব্যবস্থাপনা, সম্পদ ও তহবিল
   
পরিষদের সম্পত্তি অর্জন, দখলে রাখিবার ও নিষ্পত্তি করিবার ক্ষমতা  
৫১। (১) প্রত্যেক পরিষদের সম্পত্তি অর্জনের, দখলে রাখিবার ও নিষ্পত্তি করিবার এবং চুক্তিবদ্ধ হইবার ক্ষমতা থাকিবে; তবে, স্থাবর সম্পত্তি অর্জন বা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে পরিষদকে সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।

(২) সরকার নিম্নবর্ণিত বিষয়ে বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে, যথা :-

(ক) পরিষদের মালিকানাধীন বা উহার উপর ন্যস্ত সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা, রক্ষণাবেক্ষণ, হস্তান্তর, নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন সংক্রান্ত;

(খ) পরিষদের জন্য প্রয়োজনীয় স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত।

(৩) পরিষদ প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে-

(ক) উহার মালিকানাধীন বা উহার উপর বা উহার তত্ত্বাবধানে ন্যস্ত যে কোন সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা, রক্ষণাবেক্ষণ, পরিদর্শন ও উন্নয়ন করিতে পারিবে;

(খ) এই আইন বা বিধির উদ্দেশ্য পূরণকল্পে উক্ত সম্পত্তি কাজে লাগাইতে পারিবে; এবং

(গ) দান, বিক্রয়, বন্ধক, ইজারা, বিনিময়ের মাধ্যমে যে কোন সম্পত্তি অর্জন বা হস্তান্তর করিতে পারিবে।

(৪) পরিষদ যথাযথ জরিপের মাধ্যমে উহার নিয়ন্ত্রণাধীন সকল সম্পত্তি বিবরণাদি প্রস্তুত করিয়া প্রতি বৎসর উহা হালনাগাদ করিবে এবং, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, সম্পদের বিবরণী, মানচিত্র প্রস্তত করিয়া উহার একটি অনুলিপি নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করিবে।

(৫) এই আইন বা নির্ধারিত পদ্ধতি উপেক্ষা বা লংঘন করিয়া যদি সম্পত্তি অর্জন, দখল ও নিষ্পত্তি করা হয়, তাহা হইলে, উহা অবৈধ বলিয়া গণ্য হইবে এবং সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও প্রদানকারী ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণ এই আইনের অধীন অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্তরূপ অপরাধের জন্য এই আইনের বিধান অনুযায়ী শাস্তি প্রাপ্য হইবেন।
   
 
   
     
   
পরিষদে সম্পদ হস্তান্তর  
৫২। সরকার, কোন পরিষদ বা উহার স্থানীয় অধিক্ষেত্রের মধ্যে অবস্থিত কোন সরকারি সম্পত্তি সংশ্লিষ্ট আইন বা বিধি-বিধান অনুযায়ী উক্ত পরিষদকে হস্তান্তর করিতে পারিবে এবং উক্তরূপ হস্তান্তরিত সম্পত্তি ঐ পরিষদের উপর বর্তাইবে ও উহার নিয়ন্ত্রণাধীনে থাকিবে।
   
 
   
     
   
পরিষদের তহবিল  
৫৩। (১) প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদের জন্য সংশ্লিষ্ট পরিষদের নামে একটি তহবিল থাকিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন গঠিত তহবিলে নিম্নবর্ণিত উৎসসমূহ থেকে প্রাপ্ত অর্থ জমা হইবে, যথাঃ-

(ক) সরকার এবং অন্যান্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান ও মঞ্জুরী;

(খ) এই আইনের বিধান অনুযায়ী সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সকল স্থানীয় উৎস হইতে আয়;

(গ) অন্য কোন পরিষদ কিংবা কোন স্থানীয় কতৃর্পক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান ও মঞ্জুরী;

(ঘ) সরকার কর্তৃপক্ষ মঞ্জুরীকৃত ঋণসমূহ (যদি থাকে);

(ঙ) পরিষদ কতৃর্ক, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, আদায়কৃত সকল কর, রেইট, টোল, ফিস ও অন্যান্য দাবী বাবদ প্রাপ্ত অর্থ;

(চ) পরিষদের উপর ন্যস্ত এবং তৎকর্তৃক নির্মিত বা নিয়ন্ত্রিত বা পরিচালিত বিদ্যালয়, হাসপাতাল, ঔষধালয়, ভবন, প্রতিষ্ঠান বা পূর্ত কার্য হইতে প্রাপ্ত সকল আয় বা মুনাফা;

(ছ) কোন ট্রাষ্টের নিকট হইতে উপঢৌকন বা অনুদান হিসাবে প্রাপ্ত অর্থ;

(জ) এই আইনের বিধান অনুযায়ী প্রাপ্ত জরিমানা ও অর্থদণ্ডের অর্থ;

(ঝ) পরিষদ কর্তৃক প্রাপ্ত অন্য সকল প্রকার অর্থ;

(ঞ) এই আইন কার্যকর হইবার কালে সংশ্লিষ্ট পরিষদের সম্পূর্ণ এখতিয়ারে উদ্বৃত্ত তহবিল।
   
 
   
     
   
পরিষদের ব্যয়  
৫৪। (১) তহবিলের অর্থ নিম্নলিখিত খাতসমূহে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ব্যয় করিতে হইবে, যথা :-

(ক) পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন ও ভাতা প্রদান;

(খ) এই আইনের অধীন তহবিলের উপর দায়যুক্ত ব্যয়;

(গ) এই আইন বা আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইন বা অধ্যাদেশ দ্বারা ন্যস্ত পরিষদের দায়িত্ব সম্পাদন ও কর্তব্য পালনের জন্য ব্যয়;

(ঘ) নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদনক্রমে পরিষদ কর্তৃক ঘোষিত তহবিলের উপর দায়যুক্ত ব্যয়;

(ঙ) সরকার কর্তৃক পরিষদের উপর ঘোষিত দায়যুক্ত ব্যয়।

(২) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে পরিষদ যেরূপ উপযুক্ত মনে করিবে পরিষদের তহবিল হইতে সেইরূপ অর্থ ব্যয় করিবার ক্ষমতা উহার থাকিবে।

(৩) তহবিলে জমা খাতে উদ্বৃত্ত অর্থ, সরকার সময়ে সময়ে যেরূপ নির্দেশ দিবে, সেইরূপ খাতে ব্যয় হইবে।

(৪) পরিষদের তহবিল পরিষদ চেয়ারম্যান ও সচিবের যৌথ স্বাক্ষরে পরিচালিত হইবে।
   
 
   
     
   
পরিষদের তহবিল সংরক্ষণ বা বিনিয়োগ এবং বিশেষ তহবিল গঠন  
৫৫। (১) পরিষদের তহবিলে জমাকৃত অর্থ কোন সরকারি ট্রেজারীতে বা সরকারি ট্রেজারীর কার্য পরিচালনাকারী কোন ব্যাংকে বা সরকার কর্তৃক সময়ে সময়ে নির্ধারিত অন্য কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রাখিতে হইবে।

(২) পরিষদ নির্ধারিত পদ্ধতিতে উহার তহবিলের যে কোন অংশ বিনিয়োগ করিতে পারিবে।

(৩) পরিষদ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, কোন বিশেষ উদ্দেশ্যে পৃথক তহবিল গঠন এবং সংরক্ষণ করিতে পারিবে, যাহা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হইবে।
   
 
   
     
   
দায়যুক্ত ব্যয়  
৫৬। (১) পরিষদ তহবিলের উপর দায়যুক্ত ব্যয় নিম্নরূপ হইবে, যথাঃ -

(ক) পরিষদের চাকুরিতে নিয়োজিত সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে (প্রেষণে নিয়োগপ্রাপ্ত কিংবা নিজস্ব) বেতন ও ভাতা হিসেবে প্রদেয় সমুদয় অর্থ;

(খ) সরকার কর্তৃক নির্দেশিত পরিষদের নিবার্চন পরিচালনা, হিসাব নিরীক্ষা বা সময়ে সময়ে সরকারের নির্দেশক্রমে অন্য কোন বিষয়ের জন্য পরিষদ কর্তৃক প্রদেয় অর্থ;

(গ) কোন আদালত বা ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক পরিষদের বিরুদ্ধে প্রদত্ত কোন রায়, ডিক্রী বা রোয়েদাদ কাযর্কর করিবার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ; এবং

(ঘ) সরকার কর্তৃক দায়যুক্ত বলিয়া ঘোষিত অন্য যে কোন ব্যয়।

(২) পরিষদের তহবিলের উপর দায়যুক্ত কোন ব্যয়ের খাতে যদি কোন অর্থ অপরিশোধিত থাকে, তাহা হইলে যে ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের হেফাজতে উক্ত তহবিল থাকিবে সেই ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে সরকার, আদেশ দ্বারা, উক্ত তহবিল হইতে যতদূর সম্ভব উক্ত অর্থ পরিশোধ করিবার নির্দেশ দিতে পারিবে।
   
 
   
    দশম অধ্যায়
বাজেট ও হিসাব নিরীক্ষা
   
বাজেট  
৫৭। প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদ প্রতি অর্থ বৎসর শুরু হইবার অন্যূন ৬০ (ষাট) দিন পূর্বে নির্ধারিত পদ্ধতিতে ওয়ার্ড সভা হইতে প্রাপ্ত অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে উক্ত অর্থ বৎসরের সম্ভাব্য আয় ও ব্যয় বিবরণী সম্বলিত একটি বাজেট প্রণয়ন করিবে।

(২) ইউনিয়ন পরিষদ সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটি এবং স্থানীয় জনসাধারণের উপস্থিতিতে প্রকাশ্য বাজেট অধিবেশন অনুষ্ঠান করিয়া বাজেট পেশ করিবে এবং পরিষদের পরবর্তী সভায় পাসকৃত বাজেটের অনুলিপি উপজেলা নিবার্হী অফিসারের নিকট প্রেরণ করিবে।

(৩) কোন ইউনিয়ন পরিষদ অর্থ বৎসর শুরু হইবার পূর্বে উক্ত বাজেট প্রণয়ন করিতে ব্যর্থ হইলে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার সম্ভাব্য আয় ব্যয়ের একটি বিবরণী প্রস্তুত ও প্রত্যয়ন করিবে এবং এইরূপ প্রত্যয়নকৃত বিবরণী ইউনিয়ন পরিষদের অনুমোদিত বাজেট বলিয়া গণ্য হইবে।

(৪) উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপ-ধারা (২) এর অধীন প্রণীত বাজেটের অনুলিপি প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে বাজেটে কোন ত্রুটি থাকিলে উহা সংশোধন করিয়া পরিষদকে অবহিত করিবে এবং অনুরূপভাবে প্রণীত বাজেট ইউনিয়ন পরিষদের বাজেট বলিয়া গণ্য হইবে।

(৫) কোন অর্থ বৎসর শেষ হইবার পূর্বে যে কোন সময় উক্ত বৎসরের জন্য প্রয়োজন হইলে ইউনিয়ন পরিষদ সংশোধিত বাজেট প্রণয়ন করিয়া উহার অনুলিপি উপজেলা নিবার্হী অফিসারের নিকট প্রেরণ করিবে এবং উক্ত সংশোধিত বাজেটের ক্ষেত্রেও উপ ধারা (৪) এর বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে।

(৬) এই আইন অনুযায়ী গঠিত ইউনিয়ন পরিষদ দায়িত্বভার গ্রহণের পর অর্থ বৎসরের অবশিষ্ট সময়ের জন্য বাজেট প্রণয়ন করিতে পারিবে এবং উক্ত বাজেটের ক্ষেত্রেও এই ধারার বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে।
   
 
   
     
   
হিসাব  
৫৮। ইউনিয়ন পরিষদের আয় ও ব্যয়ের হিসাব নির্ধারিত পদ্ধতিতে ও ফরমে সংরক্ষণ করিতে হইবে।

(২) প্রত্যেক অর্থ বৎসরের শেষে ইউনিয়ন পরিষদ উক্ত অর্থ বৎসরের আয় ও ব্যয়ের হিসাব প্রস্তুত করিবে এবং ইউনিয়ন পরিষদের সকল স্থায়ী কমিটি ও জনসাধারণের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত বাজেট অধিবেশনে এই হিসাব পেশ করিবে।

(৩) ইউনিয়ন পরিষদ পরবর্তী অর্থ বৎসরের ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে উপ-ধারা (২) অনুযায়ী পরিষদের আয়-ব্যয়ের চূড়ান্ত হিসাব এর বিবরণ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট প্রেরণ করিবে; উপজেলা নির্বাহী অফিসার সমন্বিত প্রতিবেদন সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ছকে ডেপুটি কমিশনারের নিকট প্রেরণ করিবে এবং ডেপুটি কমিশনার সমন্বিত প্রতিবেদন নির্ধারিত ছকে সরকারের নিকট প্রেরণ করিবে।
   
 
   
     
   
নিরীক্ষক নিয়োগ  
৫৯। ইউনিয়ন পরিষদের তহবিলের হিসাবসমূহ সরকার যেরূপ বিহিত করিবে, সেইরূপ সময়ে ও স্থানে এবং নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় নিযুক্ত কোন নিরীক্ষক কর্তৃক পরীক্ষিত ও নিরীক্ষিত হইবে।

(২) এই ধারা অনুযায়ী নিযুক্ত নিরীক্ষক দণ্ড বিধি, ১৮৬০ (Penal Code, 1860) এর ২১ ধারা মতে জনসেবক (Public Servant) বলিয়া গণ্য হইবেন।

(৩) নিরীক্ষক তহবিলের যে সকল হিসাব উপস্থাপনের জন্য অনুরোধ জানাইবেন, পরিষদের চেয়ারম্যান, ক্ষেত্রমত, সেই সকল হিসাব নিরীক্ষকের নিকট উপস্থাপন করিবেন বা করাইবার ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।
   
 
   
     
   
নিরীক্ষকগণের ক্ষমতা  
৬০। (১) এই আইন অনুযায়ী নিরীক্ষার প্রয়োজনে কোন নিরী্ক্ষক-

(ক) নিরীক্ষা কার্য যথাযথভাবে পরিচালনার জন্য তিনি যেরূপ আবশ্যক বলিয়া বিবেচনা করিবেন সেইরূপ কোন তথ্য তাহার সম্মুখে উপস্থাপন কিংবা লিখিতভাবে সরবরাহ করিবার জন্য চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করিতে পারিবেন;

(খ) যে ব্যক্তি উক্তরূপ কোন তথ্যাদির জন্য কৈফিয়ত দিতে দায়ী, অথবা যে ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণে উক্তরূপ কোন দলিল বা তথ্য থাকে, অথবা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যগণের সহিত, দ্বারা বা পক্ষে কোন অংশ বা স্বার্থ, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে, এবং তাহার স্বনামেই হউক বা তাহার অংশীদারের নামেই হউক, থাকে, সেইরূপ কোন ব্যক্তিকে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হইবার জন্য লিখিত অনুরোধ করিতে পারিবেন; এবং

(গ) উক্তরূপ অবস্থার প্রেক্ষিতে তাহার সম্মুখে উপস্থাপিত কোন ব্যক্তিকে উক্তরূপ কোন তথ্য সম্পর্কে একটি ঘোষণা প্রস্তুত করিয়া উহা স্বাক্ষর করিবার জন্য, অথবা কোন প্রশ্নের উত্তর দিবার জন্য অথবা কোন বিবৃতি প্রস্তুত করিয়া উহা দাখিল করিবার জন্য অনুরোধ করিতে পারিবেন;

(ঘ) নিরীক্ষা কর্তৃপক্ষ নিরীক্ষা সমাপনান্তে প্রতিবেদন দাখিল করিবেন, যাহাতে অন্যান্য বিষয়ের সহিত উল্লেখ থাকিবে-

(অ) তহবিল তসরুফের ঘটনা;

(আ) পরিষদ তহবিলের ক্ষতি, অপচয়, অথবা অপপ্রয়োগের ঘটনা;

(ই) হিসাব রক্ষণের ক্ষেত্রে অন্যান্য অনিয়ম;

(ঈ) নিরীক্ষা কর্তৃপক্ষের মতে যে সকল ব্যক্তি উপ-দফা (অ), (আ) ও (ই) এ বর্ণিত অনিয়মের জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দায়ী তাহাদের নাম প্রতিবেদনে উল্লেখ থাকিতে হইবে;

(ঙ) নিরীক্ষা কর্তৃপক্ষ, নিরীক্ষা প্রতিবেদনের কপি পরিষদকে প্রদান করিয়া, তাহার অনুলিপি সরকারের নিকট প্রেরণ করিবে;

(চ) নিরীক্ষা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক চিহ্নিত অনিয়ম সংক্রান্ত সকল বিষয়ে, পরিষদ দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে এবং গৃহীত ব্যবস্থা নিরীক্ষা কর্তৃপক্ষ, সরকারকে অবহিত করিবে।

(২) যদি কোন ব্যক্তি উপ-ধারা (১) অনুযায়ী নিরীক্ষক কর্তৃক প্রদত্ত অনুরোধ পালন করিতে অবহেলা করে বা অস্বীকৃতি জানায়, তাহা হইলে, নিরীক্ষক, যে কোন সময়, উক্ত বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করিতে পারিবেন; উপজেলা নির্বাহী অফিসার, যে ব্যক্তি নিরীক্ষক কর্তৃক প্রদত্ত অনুরোধ পালন করিতে অবহেলা করিতেছে বা অস্বীকৃতি জানাইয়াছে সেই ব্যক্তিকে যেরূপ উপযুক্ত মনে করিবেন সেইরূপ নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন এবং উক্ত নির্দেশ ঐ ব্যক্তির জন্যে অবশ্যই পালনীয় হইবে।
   
 
   
     
   
নিরীক্ষা সংক্রান্ত বিধি প্রণয়ন  
৬১। সরকার নিরীক্ষা সংক্রান্ত বিধি প্রণয়ন করিবে, যাহাতে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে নিম্নলিখিত বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্ত থাকিবে, যথাঃ-

(ক) নিরীক্ষা প্রতিবেদন সংক্রান্ত সময়সীমা;

(খ) হিসাবপত্রের গুরুত্বপূর্ণ অসংগতি বা অনিয়ম;

(গ) অর্থ বা সম্পত্তির কোনরূপ ক্ষতি বা অপচয়;

(ঘ) নিরীক্ষা প্রতিবেদনের উপর ব্যবস্থা গ্রহণের সময়সীমাসহ অন্যান্য করণীয় বিষয়াবলী;

(ঙ) অবৈধভাবে অর্থ প্রদানকারী বা অর্থ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ সম্পর্কিত সুনির্দিষ্ট সুপারিশ;

(চ) হিসাবপত্রের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা;

(ছ) হিসাবপত্রের বিশেষ নিরীক্ষা।
   
 
   
    একাদশ অধ্যায়
পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারী
   
ইউনিয়ন পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারী  
৬২। প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদের একজন সচিব, একজন হিসাব সহকারী-কাম-কম্পিউটার অপারেটর থাকিবেন, যাহারা সরকার বা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কোন কতৃর্পক্ষের মাধ্যমে নিযুক্ত হইবেন।

(২) সরকার, ইউনিয়ন পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ, চাকুরির শর্ত নির্ধারণ, বেতন-ভাতা প্রদান, শৃংখলা ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ, অবসর প্রদান ইত্যাদি বিষয়ে বিধি প্রণয়ন করিবে।

(৩) পরিষদ, সরকারের পুর্বানুমোদনক্রমে, পরিষদের অন্যান্য সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ক্ষমতা ও দায়িত্ব পালন সম্পকির্ত বিষয়ে প্রবিধান প্রণয়ন করিবে।

(৪) সরকারের পূবার্নুমোদনক্রমে, ইউনিয়ন পরিষদ, প্রয়োজনবোধে, অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ করিতে পারিবে, যাহাদের বেতন, ভাতা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব তহবিল হইতে পরিশোধ করিতে হইবে।
   
 
   
     
   
সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পরিষদে হস্তান্তরে সরকারের ক্ষমতা  
৬৩। (১) নির্ধারিত শর্ত সাপেক্ষে পরিষদের সাধারণ বা বিশেষ কার্য সম্পাদনের লক্ষ্যে সরকার তৃতীয় তফসিলে বর্ণিত সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী এবং তাহাদের কার্যাবলী নির্ধারিত সময়ের জন্য পরিষদে হস্তান্তর করিতে পারিবে, উক্তরূপে হস্তান্তরিত কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণ সংশ্লিষ্ট পরিষদের ব্যবস্থাপনায় দায়িত্ব পালন করিবেন।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন হস্তান্তরিত কোন সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ সমীচীন মনে করিলে পরিষদ এ বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান করিয়া সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীর নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদন প্রেরণ করিবে।

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন পরিষদে হস্তান্তরিত কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণ তাহাদের উপর অর্পিত সাধারণ দায়িত্ব ছাড়াও পরিষদ কর্তৃক, সময়ে সময়ে, নির্ধারিত অন্যান্য দায়িত্ব পালন করিবেন।

(৪) উপ-ধারা (১) এর অধীন হস্তান্তরিত কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণ পরিষদের নিকট এই আইন বা বিধি অনুযায়ী স্থানান্তরিত নহে উক্তরূপ সরকারি প্রকল্প, স্কীম, পরিকল্পনা ইত্যাদি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করিবেন ।

(৫) সংশ্লিষ্ট পরিষদ কর্তৃক ব্যয়ভার বহনের ক্ষমতা অর্জন না করা পর্যন্ত উপ-ধারা (১) এর অধীন হস্তান্তরিত কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের বেতন, ভাতা ও অন্যান্য আর্থিক সুবিধা সরকার কর্তৃক প্রদেয় হইবে।
   
 
   
     
   
পরিষদের নির্বাচিত প্রতিনিধি ও কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণের সম্পর্ক  
৬৪। (১) পরিষদের ব্যবস্থাপনাধীন কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণের আইনগত অধিকার ও পেশাগত স্বাধীনতা নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে সরকার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন বা পরিষদে হস্তান্তরিত কর্মকর্তা বা কমর্চারীগণের মধ্যে সম্পর্ক নির্ধারণ বিষয়ক একটি আচরণ বিধি (Code of Conduct) প্রণয়ন করিবে।

(২) পরিষদের যে কোন সভায় উপস্থিত কর্মকর্তাদের মতামত সভার কার্যবিবরণীতে উল্লেখ থাকিতে হইবে।

(৩) নির্বাচিত কোন জনপ্রতিনিধি কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে কোন কার্য সম্পাদনের জন্য মৌখিক নির্দেশনা প্রদান করিলেও সংশ্লিষ্ট কাজটি বাস্তবায়নের পূর্বে লিখিতভাবে নির্দেশনা দিতে হইবে।
   
 
   
    দ্বাদশ অধ্যায়
পরিষদের করারোপ
   
পরিষদ কর্তৃক করারোপ  
৬৫। (১) ইউনিয়ন পরিষদ চতুর্থ তফসিলে উল্লিখিত সকল অথবা যে কোন কর, রেইট, টোল, ফিস ইত্যাদি নির্ধারিত পদ্ধতিতে আরোপ করিতে পারিবে।

(২) পরিষদ কর্তৃক আরোপিত সকল কর, রেইট, টোল, ফিস ইত্যাদি নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রজ্ঞাপিত হইবে এবং সরকার ভিন্নরূপ নির্দেশ না দিলে উক্ত আরোপের বিষয়টি আরোপের পূর্বেই প্রকাশ করিতে হইবে।

(৩) কোন কর, রেইট, টোল ও ফিস আরোপের বা উহার পরিবর্তনের কোন প্রস্তাব অনুমোদিত হইলে অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক যে তারিখ হইতে উহা কার্যকর হইবে বলিয়া নির্দেশ দিবে সেই তারিখ হইতে উহা কার্যকর হইবে।
   
 
   
     
   
আদর্শ কর তফসিল  
৬৬। সরকার ইউনিয়ন পরিষদের জন্য প্রাক প্রকাশনার মাধ্যমে আদর্শ কর তফসিল প্রণয়ন করিতে পারিবে এবং অনুরূপ তফসিল চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত হইলে উক্ত আদর্শ কর তফসিলে উল্লিখিত করের পরিমাণ সকল পরিষদের জন্য নমুনা হিসাবে গণ্য হইবে।
   
 
   
     
   
কর সংক্রান্ত দায়  
৬৭। (১) কোন ব্যক্তি বা জিনিসপত্রের উপর কর, রেইট, টোল কিংবা ফিস আরোপ করা যাইবে কি না উহা নির্ধারণের প্রয়োজনে পরিষদ নোটিশের মাধ্যমে উক্ত ব্যক্তিকে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করিতে বা এতদ্‌সংক্রান্ত দলিলপত্র, হিসাব বই বা জিনিসপত্র দাখিল করিবার জন্য নির্দেশ দিতে পারিবে।

(২) এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত পরিষদের কোন সদস্য বা কর্মচারী যথাযথ নোটিশ প্রদানের পর কোন ইমারত বা অঙ্গন কর আরোপযোগ্য কি না উহা যাচাই করিবার জন্য উক্ত ইমারত বা অঙ্গনে প্রবেশ করিতে পারিবেন।
   
 
   
     
   
কর সংগ্রহ ও আদায়, ইত্যাদি  
৬৮। (১) এই আইনে ভিন্নরূপ বিধান না থাকিলে, এই আইনের অধীন আরোপযোগ্য সকল কর, রেইট, টোল বা ফিস নির্ধারিত ব্যক্তি কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে আদায় করিতে হইবে।

(২) এই আইনের অধীন পরিষদ কতৃর্ক দাবীযোগ্য সকল কর, রেইট, টোল, ফিস এবং অন্যান্য অর্থ সরকারি দাবি হিসাবে আদায়যোগ্য হইবে।

(৩) এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত পরিষদের যে কোন সদস্য বা কর্মকর্তা নির্ধারিত পদ্ধতিতে বকেয়া কোন কর, রেইট, টোল বা ফিস আদায়ের জন্য জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত ও নিস্পত্তি করিতে পারিবে।

(৪) উপ-ধারা (৩) এর বিধান সত্ত্বেও, সরকার কোন পরিষদকে এই আইনের অধীন প্রাপ্য সকল অনাদায়ী কর, রেইট, টোল, ফিস বা অন্যান্য বকেয়া অর্থ আদায় করিবার উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মালিকানাধীন স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক এবং বিক্রয় করিবার ক্ষমতা প্রদান করিতে পারিবে।

(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন প্রদত্ত ক্ষমতা কোন্ কর্মকর্তা বা কোন্ শ্রেণীর কর্মকর্তা কি প্রকারে প্রয়োগ করিবেন তাহা সরকার বিধি দ্বারা নির্ধারণ করিবে।
   
 
   
     
   
কর নির্ধারণ, মূল্যায়ন ইত্যাদির বিরুদ্ধে আপত্তি  
৬৯। এই আইনের অধীন ধার্য কোন কর, রেইট, টোল বা ফিস বা এতদ্‌সংক্রান্ত কোন সম্পত্তির মূল্যায়ন অথবা কোন ব্যক্তি কতৃর্ক উহা প্রদানের দায়িত্ব সম্পর্কে কোন আপত্তি লিখিত দরখাস্তের মাধ্যমে নির্ধারিত কতৃর্পক্ষের নিকট এবং নির্ধারিত সময় ও পদ্ধতিতে উত্থাপন করিতে হইবে।
   
 
   
     
   
কর বিধি  
৭০। (১) পরিষদ কতৃর্ক ধাযর্কৃত সকল কর, রেইট, টোল, ফিস এবং অন্যান্য দাবি বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ধার্য, আরোপ, ইত্যাদি পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করা যাইবে।

(২) এই ধারায় উল্লিখিত বিষয় সম্পর্কিত বিধিতে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে করদাতাদের করণীয় এবং কর ধার্যকারী ও আদায়কারী কর্মকর্তা ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা ও দায়িত্ব সম্পর্কে বিধান থাকিবে।
   
 
   
    ত্রয়োদশ অধ্যায়
সরকারের ক্ষমতা
   
পরিষদের রেকর্ড, ইত্যাদি পরিদর্শনের ক্ষমতা  
৭১।(১) সরকার বা সরকার কর্তৃক ক্ষমতা প্রাপ্ত যে কোন কর্মকর্তা পরিষদকে নিম্নরূপ নির্দেশ দিতে পারিবে, যথাঃ-

(ক) পরিষদের হেফাজতে বা নিয়ন্ত্রণাধীন যে কোন রেকর্ড, রেজিস্টার বা অন্যান্য নথিপত্র উপস্থাপনঃ

তবে শর্ত থাকে যে, প্রয়োজনে এই সকল রেকর্ড, রেজিস্টার বা নথিপত্রের ফটোকপি রাখিয়া মূল কপি ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট পরিষদে ফেরত দিতে হইবে;

(খ) যে কোন রিটার্ন, প্ল্যান, প্রাক্কলন, আয়-ব্যয় বিবরণী ইত্যাদি দাখিল;

(গ) পরিষদ সংশ্লিষ্ট যে কোন তথ্য বা প্রতিবেদন সরবরাহ।

(২) পরিষদের আয়ের উৎস হিসাবে কোন দাবি পরিত্যাগ বা কোন প্রতিষ্ঠান বন্ধ করিয়া দেওয়ার পূর্বে সরকারের পূর্বানুমতি গ্রহণ করিতে হইবে।

(৩) ডেপুটি কমিশনার বা তৎকর্তৃক ক্ষমতা প্রাপ্ত যে কোন কর্মকর্তা যে কোন পরিষদ এবং পরিষদের নথিপত্র, স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি, সমাপ্ত ও চলমান উন্নয়ন প্রকল্পসহ যে কোন নিমার্ণ কাজ পরিদর্শন করিতে পারিবেন।

(৪) পরিষদের চেয়ারম্যান, সচিব ও অন্যান্য কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণ উপ-ধারা (১) অনুযায়ী নিযুক্ত কর্মকর্তাকে সহযোগিতা করিতে বাধ্য থাকিবেন।

(৫) সরকার, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, নির্দিষ্ট সময় পর পর প্রত্যেক পরিষদের প্রশাসনিক কাযর্ক্রম সংক্রান্ত পারফরমেন্স অডিট সম্পন্ন করিবে।
   
 
   
     
   
কারিগরি তদারকি ও পরিদর্শন  
৭২। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে কোন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এবং তৎকর্তৃক মনোনীত কারিগরি কর্মকর্তাগণ পরিষদের মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন উক্ত বিভাগের উন্নয়ন প্রকল্পসমূহ এবং সংশ্লিষ্ট রেকর্ড ও নথিপত্র পরিদর্শন করিতে পারিবেন।
   
 
   
     
   
সরকারের দিক নির্দেশনা প্রদান এবং তদন্ত করিবার ক্ষমতা  
৭৩। (১) এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার, সরকারের নীতির সাথে সঙ্গতি রাখিয়া যে কোন পরিষদকে আর্থিক ব্যবস্থাপনা, কর্মকর্তা ও কর্মচারী ব্যবস্থাপনা, বিভিন্ন প্রকার প্রকল্প প্রণয়ন ও প্রকল্পের উপকারভোগী নির্বাচন, পরিষদ ও ওয়ার্ড সভার কার্যক্রম পরিচালনা, ইত্যাদি বিষয়ে দিক নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে, এবং পরিষদ উক্তরূপ দিক নির্দেশনা বাধ্যতামুলকভাবে অনুসরণ করিবে।

(২) কোন প্রকল্প বাস্তবায়ন বা কোনরূপ আর্থিক অনিয়ম বা পরিষদের অন্য যে কোন অনিয়মের বিষয়ে প্রাপ্ত অভিযোগ সরকার বা সরকার কতৃর্ক নিযুক্ত এক বা একাধিক কর্মকর্তা তদন্ত করিতে পারিবেন এবং সংশ্লিষ্ট পরিষদ উক্ত তদন্ত কাজ পরিচালনায় সহযোগিতা করিবেন।

(৩) উপ-ধারা (২) অনুযায়ী তদন্ত সম্পাদনের পর তদন্তের ফলাফলের উপর ভিত্তি করিয়া সরকার, এই আইনের বিধান সাপেক্ষে, দায়ী ব্যক্তি, কর্মকর্তা ও কর্মচারী বা পরিষদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।
   
 
   
     
   
পরিষদ, পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ  
৭৪। (১) যদি সরকারের নিকট এই মর্মে প্রতীয়মান হয় যে, কোন পরিষদ বা পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা এই আইন বা সরকারের অন্য কোন আদেশ দ্বারা নির্ধারিত দায়িত্ব সম্পাদনে ব্যর্থ হইয়াছে, তাহা হইলে, সরকার অথবা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ লিখিত আদেশ দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উক্তরূপ দায়িত্ব পালনের জন্য পরিষদ বা চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দায়িত্ব সম্পাদনে বা আদেশ পালনে ব্যর্থ হইলে সরকার সংশ্লিষ্টদের যুক্তিসংগত সুযোগ প্রদান করিয়া, কারণ দর্শাইবেন এবং উক্তরূপ দায়িত্ব সম্পাদন বা আদেশ পালনের জন্য যে কোন কর্মকর্তা বা কতৃর্পক্ষকে দায়িত্ব পালনার্থে নিয়োগ করিবেন এবং এতদ্‌সংশ্লিষ্ট আর্থিক সংশ্লেষ, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, পরিষদের তহবিল বা সংশ্লিষ্টদের ব্যক্তিগত তহবিল হইতে বহনের নির্দেশ প্রদান করিবেন।
   
 
   
     
   
পরিষদের সিদ্ধান্ত, কার্যবিবরণী, ইত্যাদি বাতিল বা স্থগিতকরণ  
৭৫।(১) সরকার স্বয়ং অথবা পরিষদের চেয়ারম্যান বা সদস্য বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা অন্য কোন ব্যক্তির আবেদনের প্রেক্ষিতে পরিষদের যে কোন কার্যবিবরণী বা সিদ্ধান্ত বাতিল বা স্থগিত করিতে পারিবে, যদি উক্তরূপ সিদ্ধান্ত বা কার্যবিবরণী-

(ক) আইনসংগতভাবে গৃহীত না হইয়া থাকে;

(খ) এই আইন বা অন্য কোন আইনের পরিপন্থী বা অপব্যবহারমূলক হইয়া থাকে;

(গ) মানুষের জীবন, স্বাস্থ্য, জননিরাপত্তা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি হুমকির সম্মুখীন করে অথবা দাঙ্গা বা ঝগড়া-বিবাদের সৃষ্টির সম্ভাবনা সৃষ্টি করে; অথবা

(ঘ) সরকার কর্তৃক জারিকৃত দিকনির্দেশনামূলক সিদ্ধান্তের পরিপন্থী হয়।

(২) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী কোন সিদ্ধান্ত বা কার্যবিবরণী বাতিল বা স্থগিত করিবার পূর্বে সরকার সংশ্লিষ্ট পরিষদকে যথাযথ শুনানির সুযোগ দিয়া উক্ত শুনানীর ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট পরিষদের কার্যবিবরণী বা সিদ্ধান্ত বাতিল বা সংশোধন বা চূড়ান্ত করিবে।

(৩) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী পরিষদের কোন সিদ্ধান্ত বা কার্যবিবরণী বাতিল বা সংশোধন করা প্রয়োজন মনে করিলে, উপ-ধারা (২) অনুযায়ী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্ব পর্যন্ত সরকার সাময়িকভাবে উক্ত কার্যবিবরণীর সিদ্ধান্ত স্থগিত করিতে পারিবে।
   
 
   
     
   
পরিষদের বার্ষিক, আর্থিক ও প্রশাসনিক প্রতিবেদন  
৭৬।(১) পরিষদ প্রত্যেক বৎসর সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফরমে ও পদ্ধতিতে পরিষদের বার্ষিক, আর্থিক ও প্রশাসনিক প্রতিবেদন প্রস্তুত করিবে এবং পরবর্তী বৎসরের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে উহা সরকারের নিকট প্রেরণ করিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এ প্রদত্ত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন প্রকাশ করিতে না পারিলে সরকার পরিষদের অনুকূলে অনুদান প্রদান স্থগিত রাখিতে পারিবে।

(৩) পরিষদের সচিব চেয়ারম্যানের সঙ্গে পরামর্শক্রমে উক্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করিবেন এবং উহা চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পরিষদের সভায় উপস্থাপন করিবেন।

(৪) ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার সমন্বিত প্রতিবেদন সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ছকে ডেপুটি কমিশনারের নিকট প্রেরণ করিবেন এবং ডেপুটি কমিশনার সমন্বিত প্রতিবেদন নির্ধারিত ছকে সরকারের নিকট প্রেরণ করিবেন।

(৫) সরকার উপ-ধারা (৪) অনুসারে প্রাপ্ত সমন্বিত বার্ষিক প্রতিবেদন সংসদের পরবর্তী অধিবেশনে উপস্থাপন করিবে।
   
 
   
     
   
পরিষদ বাতিল ও পুনঃনির্বাচন  
৭৭। (১) সরকার নিম্নলিখিত কারণে যথাযথ তদন্তপূর্বক সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা পরিষদ বাতিল করিতে পারিবে, যথাঃ-

(ক) নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরবর্তী অর্থ বৎসরের বাজেট পাশ করিতে ব্যর্থ হইলে; অথবা

(খ) পরিষদের ৭৫% (শতকরা ৭৫ ভাগ) নির্বাচিত সদস্য পদত্যাগ করিলে; অথবা

(গ) পরিষদের ৭৫% (শতকরা ৭৫ ভাগ) নির্বাচিত সদস্য এই আইনের অধীন অযোগ্য হওয়ার কারণে অপসারিত হইলে ; অথবা

(ঘ) পরিষদ ক্ষমতার অপব্যবহার করিলে; অথবা

(ঙ) সরকারের বিবেচনায় কোন পরিষদ এই আইন ও অন্যান্য আইন বা বিধি এবং সরকারের সার্কুলার, পরিপত্র ইত্যাদির মাধ্যমে অর্পিত দায়িত্ব পালনে ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ হইলেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, পরিষদ বাতিল করিবার পূর্বে পরিষদকে যুক্তিসংগতভাবে শুনানীর সুযোগ দিতে হইবে।

(২) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী পরিষদ বাতিলের আদেশ প্রজ্ঞাপন জারীর তারিখ হইতে কার্যকর হইবে এবং গেজেট প্রজ্ঞাপনের কপি নির্বাচন কমিশনে প্রেরণ করিতে হইবে।

(৩) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী প্রজ্ঞাপন জারীর তারিখ হইতে পরিষদের চেয়ারম্যান ও সকল সদস্যের আসন শূন্য হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত আসন শূন্য হইবার অন্যূন ১৮০ (একশত আশি) দিনের মধ্যে পুনঃনির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পরিষদ পুনর্গঠিত হইবে।

(৪) পুনর্গঠিত পরিষদের সদস্যগণ পরিষদের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হইবেন এবং দায়িত্ব পালন করিবেন।

(৫) পরিষদ বাতিল হইবার এবং পুনর্গঠিত হইবার অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে সরকার কতৃর্ক নিযুক্ত একটি প্রশাসনিক কমিটি পরিষদের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করিবে।

(৬) পরিষদের সকল সম্পদ ও দায় উপ-ধারা (৪) অনুযায়ী পুনর্গঠিত পরিষদের উপর দায়িত্ব গ্রহণের পর হইতে পরিষদের অবশিষ্ট মেয়াদকাল পর্যন্ত এবং উপ-ধারা (৫) অনুযায়ী গঠিত প্রশাসনিক কমিটির উপর দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ হইতে পরিষদ পুনর্গঠন হওয়া পর্যন্ত বর্তাইবে।
   
 
   
    চতুর্দশ অধ্যায়
তথ্য প্রাপ্তির অধিকার
   
তথ্য প্রাপ্তির অধিকার  
৭৮। (১) প্রচলিত আইনের বিধান সাপেক্ষে, বাংলাদেশের যে কোন নাগরিকের পরিষদ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, প্রাপ্তির অধিকার থাকিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার জনস্বার্থ এবং স্থানীয় প্রশাসনিক নিরাপত্তার স্বার্থে গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে কোন রেকর্ড বা নথিপত্র ক্লাসিফাইড রেকর্ড হিসাবে বিশেষ শ্রেণীভুক্ত করিতে পারিবে।

(৩) কোন ব্যক্তির উক্তরূপ বিশেষ শ্রেণীভুক্ত রেকর্ড ও নথিপত্রের তথ্য জানিবার অধিকার থাকিবে না এবং পরিষদ এই সংক্রান্ত যে কোন আবেদন অগ্রাহ্য করিতে পারিবে।

(৪) সরকার, সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা, এলাকার জনসাধারণের নিকট সরবরাহযোগ্য তথ্যের একটি তালিকা প্রকাশের জন্য পরিষদকে আদেশ দিতে পারিবে।
   
 
   
     
   
তথ্য সরবরাহের পদ্ধতি  
৭৯। (১) কোন ব্যক্তির কোন তথ্যের প্রয়োজন হইলে তাহাকে নির্ধারিত ফরমে এবং নির্ধারিত ফি দিয়া পরিষদের চেয়ারম্যানের বরাবরে লিখিত আবেদন করিতে হইবে; উক্ত দরখাস্ত নামঞ্জুর বা অন্যরূপ নিষ্পত্তি না হইলে সচিব নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যাচিত তথ্য সরবরাহ করিবেন।

(২) কোন ব্যক্তির আবেদন নামঞ্জুর হইলে উক্ত নামঞ্জুরের কারণ তাহাকে লিখিতভাবে জানাইতে হইবে।
   
 
   
     
   
তথ্য প্রদানের বাধ্যবাধকতা  
৮০। (১) পরিষদের সচিব বা দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্য কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী এই অধ্যায়ে বর্ণিত নোটিফাইড রেকর্ডপত্র ব্যতীত অন্যান্য তথ্য নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে সরবরাহ করিতে বাধ্য থাকিবে।

(২) যদি সচিব বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারী নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে উক্তরূপ তথ্য সরবরাহ না করেন, তাহা হইলে প্রতিদিনের বিলম্বের জন্য ৫০/- (পঞ্চাশ) টাকা হারে জরিমানা দিতে হইবে এবং উক্ত জরিমানার অর্থ পরিষদের তহবিলে জমা হইবে।

(৩) পরিষদের সচিব বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারী যদি তথ্য সরবরাহ না করেন, অথবা যদি তাহার জানা সত্ত্বেও অসত্য বা ভুল তথ্য সরবরাহ করেন, তাহা হইলে তিনি অন্যূন ১,০০০/- (এক হাজার) টাকা অর্থ দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
   
 
   
     
   
সরল বিশ্বাসে কৃত কার্য রক্ষণ  
৮১। এই আইন, বিধি বা প্রবিধান বা আদেশের অধীন সরল বিশ্বাসে কৃত কোন কার্যের ফলে কোন ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হইবার সম্ভাবনা থাকিলে তজ্জন্য সরকার, পরিষদ বা উহাদের নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন দেওয়ানী বা ফৌজদারী মামলা বা অন্য কোন আইনগত কার্যক্রম গ্রহণ করা যাইবে না।
   
 
   
    পঞ্চদশ অধ্যায়
টিউটোরিয়াল স্কুল, কোচিং সেন্টার, প্রাইভেট হাসপাতাল, ইত্যাদি নিবন্ধিকরণ
   
টিউটোরিয়াল স্কুল, কোচিং সেন্টার ইত্যাদি নিবন্ধিকরণ  
৮২। (১) এই আইন কাযর্কর হওয়ার তারিখে বা তৎপরবর্তীতে পরিষদ এলাকায় পরিষদের নিবন্ধন ব্যতীত বেসরকারিভাবে বা ব্যক্তিগতভাবে পরিচালিত টিউটোরিয়াল স্কুল বা কোচিং সেন্টার চালু করা যাইবে না; উক্তরূপ নিবন্ধনের জন্য নির্ধারিত পদ্ধতিতে পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবরে আবেদন করিতে হইবে এবং উক্তরূপ আবেদন প্রাপ্তির পর পরিষদ প্রয়োজনীয় তদন্ত করিয়া সন্তোষজনক বিবেচিত হইলে পরিষদ সভার অনুমোদক্রমে নিবন্ধনের অনুমতি প্রদান করিবে ।

(২) এই আইন জারি হওয়ার সময় যে সকল টিউটোরিয়াল স্কুল বা কোচিং সেন্টার চালু থাকিবে সে সকল প্রতিষ্ঠান সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করিলে পরিষদ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধন করিবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, কোন সরকারি সম্পত্তিতে সরকারের পূর্বানুমোদন ব্যতীত এই ধরনের টিউটোরিয়াল স্কুল বা কোচিং সেন্টার চালু করিবার আবেদন করিলে উহা নিবন্ধন করা যাইবে নাঃ

আরও শর্ত থাকে যে, সরকারি সম্পত্তিতে পূর্ব হইতে চালুকৃত প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সরকারি সম্পত্তি ব্যবহার সংক্রান্ত অনুমতি না পাইলে উক্তরূপ প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন নির্দিষ্ট সময়ের পর বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে।

(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন নিবন্ধিত প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন পাঁচ বৎসর অন্তর অন্তর সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি দিয়া নবায়ন করিতে হইবে।
   
 
   
     
   
প্রাইভেট হাসপাতাল, ইত্যাদি নিবন্ধিকরণ  
৮৩। (১) এই আইন কাযর্কর হওয়ার তারিখে বা তৎপরবর্তীতে পরিষদের এখতিয়ারাধীন এলাকায় পরিষদে যথানিয়মে নিবন্ধন ব্যতীত কোন প্রাইভেট হাসপাতাল, প্যারামেডিক্যাল ইনস্টিটিউট ইত্যাদি প্রতিষ্ঠা করা যাইবে না।

(২) এই আইন জারি হওয়ার সময় যে সকল প্রাইভেট হাসপাতাল, প্যারামেডিক্যাল ইনস্টিটিউট চালু থাকিবে সে সকল প্রতিষ্ঠান সরকার কর্তৃক নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করিলে পরিষদ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধন করিবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, কোন সরকারি সম্পত্তিতে সরকারের পূর্বানুমোদন ব্যতীত এই ধরনের প্রাইভেট হাসপাতাল, প্যারামেডিক্যাল ইনস্টিটিউট চালু করিবার আবেদন করিলে উহা নিবন্ধন করা যাইবে নাঃ

আরও শর্ত থাকে যে, সরকারি সম্পত্তিতে পূর্ব হইতে চালুকৃত প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সরকারি সম্পত্তি ব্যবহার সংক্রান্ত অনুমতি না পাইলে উক্ত প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন নির্দিষ্ট সময়ের পর বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে।

(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন নিবন্ধিত প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন ৫ (পাঁচ) বৎসর অন্তর অন্তর সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি দিয়া নবায়ন করিতে হইবে।
   
 
   
     
   
নিবন্ধিকরণে ব্যর্থতার দণ্ড  
৮৪। কোন ব্যক্তি পরিষদের নিবন্ধন ব্যতীত কোন টিউটোরিয়াল স্কুল, কোচিং সেন্টার, প্রাইভেট হাসপাতাল বা প্যারামেডিক্যাল ইনস্টিটিউট স্থাপন বা পরিচালনা করিলে অথবা উক্তরূপ প্রতিষ্ঠান বা হাসপাতালের নিবন্ধন বাতিল করিবার পরও উহা পরিচালনা অব্যাহত রাখিলে অনধিক ৫,০০০/- (পাঁচ হাজার) টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবে এবং উক্তরূপ অর্থদণ্ড আরোপের তারিখের পরেও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা হাসপাতাল পরিচালনা বন্ধ না করিলে প্রতিদিনের জন্য পাঁচশত টাকা হারে অতিরিক্ত জরিমানা দিতে হইবে।
   
 
   
     
   
পরিষদ কর্তৃক ফি আদায়  
৮৫। পরিষদ উহার এখতিয়ারাধীন এলাকায় নিবন্ধিত টিউটোরিয়াল স্কুল, কোচিং সেন্টার, প্রাইভেট হাসপাতাল, প্যারামেডিক্যাল ইনস্টিটিউট ইত্যাদির নিকট হইতে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হারে বাৎসরিক ফি আদায় করিতে পারিবে।
   
 
   
     
   
পুনঃনিবন্ধিকরণ  
৮৬। (১) কোন টিউটোরিয়াল স্কুল, কোচিং সেন্টার, প্রাইভেট হাসপাতাল, প্যারামেডিক্যাল ইনস্টিটিউট ইত্যাদির নিবন্ধন ধারা ৮২ এবং ৮৩ এর শর্তাংশে বর্ণিত অনিয়ম ব্যতীত, নিজস্ব ব্যত্যয়ের কারণে বাতিল হইয়া ধারা ৮৪ অনুযায়ী দণ্ড প্রাপ্ত হইলে জরিমানা প্রদানের ছয় মাসের মধ্যে দ্বিগুণ পরিমাণ জরিমানাসহ পুনঃনিবন্ধিকরণের জন্য নির্ধারিত পদ্ধতিতে কারণ উল্লেখ পূর্বক আবেদন করিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন দাখিলকৃত আবেদন তদন্তপূর্বক সন্তোষজনক বিবেচিত হইলে পরিষদ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে পুনঃনিবন্ধন করিতে পারিবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, কোন প্রতিষ্ঠান এই ধারার অধীনে পুনঃনিবন্ধনের সুযোগ একবারের বেশি গ্রহণ করিতে পারিবে না।
   
 
   
    ষোড়শ অধ্যায়
অন্যান্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, অপরাধ, দণ্ড ইত্যাদি
   
যৌথ কমিটি  
৮৭। কোন অভিন্ন উদ্দেশ্য সাধনের জন্য কোন ইউনিয়ন পরিষদ অন্য যে কোন ইউনিয়ন পরিষদ অথবা পরিষদসমূহের সাথে বা কোন পৌরসভা অথবা পৌরসভাসমূহের সাথে অথবা কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ অথবা কর্তৃপক্ষসমূহের সাথে যৌথ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যৌথ কমিটি গঠন করিতে পারিবে এবং কমিটির কার্য পরিচালনার জন্য প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতাসহ যে কোন ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষমতা অর্পণ করিতে পারিবে।
   
 
   
     
   
পরিষদ ও পৌরসভার মধ্যে বিরোধ  
৮৮। যদি দুই বা ততোধিক পরিষদ অথবা কোন পরিষদ এবং পৌরসভার মধ্যে অথবা কোন পরিষদ এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়, তাহা হইলে বিষয়টি মীমাংসার জন্য-

(ক) সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহ একই জেলার হইলে, ডেপুটি কমিশনারের নিকট পাঠাইতে হইবে;

(খ) সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহ একই বিভাগে হইলে, বিভাগীয় কমিশনারের নিকট পাঠাইতে হইবে; এবং

(গ) সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহ ভিন্ন ভিন্ন বিভাগের হইলে অথবা একটি পক্ষ ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড হইলে সরকারের নিকট পাঠাইতে হইবে; এবং ক্ষেত্রমত, বিভাগীয় কমিশনার অথবা সরকারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হইবে।
   
 
   
     
   
অপরাধ ও দণ্ড  
৮৯। (১) পঞ্চম তফসিলে বর্ণিত অপরাধসমূহ এই আইনের অধীনে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসাবে গণ্য হইবে।

(২) এই আইনের অধীনে কোন অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ১৫,০০০ (পনের হাজার) টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড প্রদান করা যাইবে এবং উক্ত অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটিলে প্রথমবার অপরাধ সংঘটনের পর উক্ত অপরাধের সাথে পুনরায় জড়িত থাকিবার সময়কালে প্রতিদিনের জন্য সর্বোচ্চ ২০০ (দুইশত) টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড প্রদান করা যাইবে।
   
 
   
     
   
অপরাধের আপোষ রফা  
৯০। চেয়ারম্যান অথবা নির্ধারিত কতৃর্পক্ষ কতৃর্ক সাধারণভাবে অথবা বিশেষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি বা কর্মকর্তা এই আইনের অধীনে কোন অপরাধের আপোষ মীমাংসা করিতে পারিবেন।
   
 
   
     
   
অপরাধ বিচারার্থে গ্রহণ  
৯১। পরিষদ কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তির নিকট হইতে লিখিত কোন অভিযোগ ব্যতীত কোন আদালত, এই আইনের অধীন কোন অপরাধ বিচারার্থে গ্রহণ করিতে পারিবে না।
   
 
   
     
   
পুলিশ কর্মকর্তার দায়িত্ব ও কর্তব্য  
৯২। প্রত্যেক পুলিশ কর্মকর্তার দায়িত্ব ও কর্তব্য হইবে -

(ক) এই আইনে বর্ণিত কোন অপরাধ সংঘটনের চেষ্টা বা অপরাধ সংঘটনের খবর সম্পর্কে অনতিবিলম্বে পরিষদের চেয়ারম্যান বা সচিব বা অন্য কোন কর্মকর্তাকে অবহিত করা;

(খ) পরিষদের চেয়ারম্যান, সচিব বা অন্য কোন কর্মকর্তার লিখিত অনুরোধের ভিত্তিতে আইনসঙ্গত দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা।
   
 
   
    সপ্তদশ অধ্যায়
বিবিধ
   
অবৈধ দখল  
৯৩। (১) কোন ব্যক্তি কোন পরিষদের জায়গা, সড়ক অথবা নর্দমার বা তার অংশ বিশেষ স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে অবৈধ দখল করিতে পারিবে না।

(২) পরিষদ নোটিশ প্রদানের মাধ্যমে, অবৈধ দখলকারী ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অবৈধভাবে দখলকৃত স্থানসমূহ হইতে তাহার সম্পদ বা সম্পত্তি অপসারণ করিবার নির্দেশ দিতে পারিবে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাহা অপসারণ করা না হইলে পরিষদ স্বীয় উদ্যোগে তাহা অপসারণের ব্যবস্থা করিবে এবং এই বাবদ খরচের অর্থ এই আইন মোতাবেক অবৈধ দখলের জন্য দায়ী ব্যক্তির উপর পরিষদের পাওনা হিসাবে ধার্য হইবে।

(৩) অন্য কোন আইনে যাহাই থাকুক না কেন, এই ধারা অনুসারে অপসারিত অথবা অপসারণযোগ্য মালামালের জন্য অবৈধ দখলদারকে কোন প্রকার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হইবে না।
   
 
   
     
   
আপীল আদেশ  
৯৪। এই আইন, বিধি বা প্রবিধান অনুসারে পরিষদ কর্তৃক প্রদত্ত কোন আদেশের ফলে কোন ব্যক্তি সংক্ষুব্ধ হইলে তিনি বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট আপিল করিতে পারিবেন; এবং এই আপিলের উপর নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে এবং ইহার বিরুদ্ধে কোন আদালতে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।
   
 
   
     
   
স্থায়ী আদেশ  
৯৫। সরকার, সময়ে সময়ে, স্থায়ী আদেশ দ্বারা-

(ক) স্থানীয় পরিষদ ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে সম্পর্ক নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিবে;

(খ) স্থানীয় পরিষদ ও সরকারি দপ্তরসমূহের কার্যাবলীর সমন্বয় সাধন করিতে পারিবে;

(গ) স্থানীয় পরিষদকে আর্থিক সহায়তা প্রদানসহ বিশেষ শর্তে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে মঞ্জুরী প্রদান করিতে পারিবে;

(ঘ) কোন স্থানীয় পরিষদ কর্তৃক অন্য স্থানীয় পরিষদকে চাঁদা প্রদানের ব্যবস্থা করিতে পারিবে; এবং

(ঙ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে স্থানীয় পরিষদকে সাধারণ নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে।
   
 
   
     
   
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা  
৯৬। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার নিম্নবর্ণিত সকল অথবা যে কোন বিষয়ে বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে, যথাঃ-

(ক) চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের ক্ষমতা ও কার্যাবলী;

(খ) সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্যদের ক্ষমতা ও বিশেষ কার্যাবলী;

(গ) পরিষদের পক্ষে চুক্তি সম্পাদন;

(ঘ) পরিষদ কর্তৃক যে সকল রেকর্ড, রিপোর্ট রক্ষণাবেক্ষণ, প্রস্তুত বা প্রকাশ করা হইবে তাহা নির্ধারণ;

(ঙ) পরিষদের কর্মকর্তা ও কমর্চারীগণের নিয়োগ ও চাকুরির শর্তাবলী;

(চ) তহবিল ও বিশেষ তহবিলসমূহের ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা, নিয়ন্ত্রণ, তত্ত্বাবধান ও বিনিয়োগ;

(ছ) বাজেট প্রণয়ন ও অনুমোদন এবং এতদ্‌সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়;

(জ) হিসাব রক্ষণ এবং নিরীক্ষণ;

(ঝ) পরিষদের সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা, সংরক্ষণ ও হস্তান্তর;

(ঞ) উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন, নিয়ন্ত্রণ, সমন্বিতকরণ, অনুমোদন ও বাস্তবায়ন;

(ট) পরিষদের অর্থের বা সম্পত্তির ক্ষতিসাধন বা বিনষ্টিকরণ বা ক্ষমতার অপপ্রয়োগের জন্য পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং অন্য কোন ব্যক্তির দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ করিবার পদ্ধতি;

(ঠ) কর, রেইট, টোল এবং ফিস ধার্য, আদায় ও নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়;

(ড) পরিষদের আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের কতৃর্পক্ষ নির্ধারণ পদ্ধতি;

(ঢ) পরিষদ পরিদর্শনের পদ্ধতি এবং পরিদর্শকের ক্ষমতা।
   
 
   
     
   
প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা  
৯৭। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে পরিষদ, সরকারের পূবার্নুমোদনক্রমে, এই আইন বা কোন বিধির সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এইরূপ প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে এবং উক্ত ক্ষমতার সামগ্রিকতাকে ক্ষুণ্ন না করিয়া অনুরূপ প্রবিধানে নিম্নরূপ বিষয়ে বিধান করা যাইবে, যথাঃ-

(ক) পরিষদের কার্যাবলী পরিচালনা;

(খ) সভা আহবান;

(গ) সভার কোরাম নির্ধারণ;

(ঘ) সভার কার্যবিবরণী লিখন;

(ঙ) সভায় গৃহীত প্রস্তাব বাস্তবায়ন;

(চ) স্থায়ী কমিটির বিষয়াদি ও কার্যাবলী পরিচালনা;

(ছ) সাধারণ সীলমোহর হেফাজত ও ব্যবহার;

(জ) কোন সদস্য, কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে পরিষদের চেয়ারম্যানের ক্ষমতা অর্পণ;

(ঝ) পরিষদের অফিসের বিভাগ ও শাখা গঠন এবং সব কাজের পরিধি নির্ধারণ;

(ঞ) গবাদি পশু ও অন্যান্য প্রাণীর বিক্রয় রেজিস্ট্রিকরণ;

(ট) সাধারণের ব্যবহার্য সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ;

(ঠ) শ্মশান ও কবরস্থান নিয়ন্ত্রণ;

(ড) সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ;

(ঢ) অবৈধ দখল রোধকরণ;

(ণ) গবাদি পশুর খোয়াড় ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ;

(ত) শিক্ষা সফর, পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি উপলক্ষে সরকারি বা বেসরকারিভাবে বিদেশ ভ্রমণ;

(থ) এই আইনের অধীন প্রবিধান দ্বারা নিয়ন্ত্রণযোগ্য অন্য যে কোন বিষয়।
   
 
   
     
   
বিধি ও প্রবিধান সংক্রান্ত সাধারণ বিধান, ইত্যাদি  
৯৮। (১) পরিষদ সম্পর্কিত বিধি ও প্রবিধানের কপি পরিষদ অফিসে পরিদর্শন ও বিক্রয়ের জন্য রাখিতে হইবে।

(২) সরকার নমুনা প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে এবং এইরূপ কোন নমুনা প্রবিধান প্রণীত হইলে পরিষদ প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষেত্রে উক্ত নমুনা অনুসরণ করিবে।
   
 
   
     
   
নির্ধারিত কতিপয় বিষয়  
৯৯। এই আইনের অধীন কোন কাজ করিবার জন্য নির্ধারিত থাকা সত্ত্বেও যদি কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বা কোন্ পদ্ধতিতে তাহা করা হইবে তৎসম্পর্কে কোন বিধান না থাকে তাহা হইলে উক্ত কাজ সরকার কর্তৃক নির্দেশিত কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত পদ্ধতিতে সম্পন্ন করিবে।
   
 
   
     
   
প্রথম নিবার্চনের জন্য পরিষদ এবং ওয়ার্ড  
১০০। এই আইনের অধীন পরিষদের প্রথম নির্বাচনের উদ্দেশ্যে এই আইন জারি হইবার পূর্ব পর্যন্ত যে সকল পরিষদের অস্তিত্ব ছিল, সরকার ভিন্নরূপ কোন আদেশ না দিলে, এই আইনের অধীন ঘোষিত ইউনিয়ন বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সকল ওয়ার্ডে ধারা ১৩ অনুযায়ী সীমানা নির্ধারিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
   
 
   
     
   
অসুবিধা দূরীকরণ  
১০১। এই আইনের বিধানাবলী কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোন অসুবিধা দেখা দিলে সরকার, উক্ত অসুবিধা দূরীকরণার্থ, আদেশ দ্বারা, প্রয়োজনীয় যে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।
   
 
   
     
   
ক্ষমতা অর্পণ  
১০২। (১) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন বা বিধিসমূহে বর্ণিত, যেকোন ক্ষমতা বিভাগীয় কমিশনার বা তাহার অধীনস্থ কোন কর্মকর্তাকে অর্পণ করিতে পারিবে।

(২) বিভাগীয় কমিশনার, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, তাহার উপর অর্পিত যেকোন ক্ষমতা তাহার অধীনস্থ অন্য কোন কর্মকর্তাকে অর্পণ করিতে পারিবে।
   
 
   
     
   
লাইসেন্স ও অনুমোদন  
১০৩। (১) এই আইন অথবা বিধি অথবা প্রবিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন কাজ সম্পাদন করিবার জন্য পরিষদের অনুমতি বা অনুমোদনের প্রয়োজন হইলে, উক্ত অনুমতি বা অনুমোদন লিখিত আকারে প্রদান করিতে হইবে।

(২) পরিষদ কর্তৃক অথবা পরিষদের কর্তৃত্বের অধীন প্রদত্ত সকল লাইসেন্স অনুমোদন বা অনুমতি চেয়ারম্যান কর্তৃক অথবা চেয়ারম্যানের অনুমোদনক্রমে বিধি ও প্রবিধান দ্বারা পরিষদের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা কর্তৃক স্বাক্ষরিত হইতে হইবে।
   
 
   
     
   
পরিষদের বিরুদ্ধে মোকদ্দমা দায়ের  
১০৪। সরকারিভাবে দায়িত্ব পালনকালে কোন পরিষদ কিংবা কোন সদস্য, কর্মকর্তা বা কর্মচারী দ্বারা কৃত কোন কাজ, বা কাজ করা হইয়াছে বলিয়া মনে হইলে, সে সম্পর্কে লিখিতভাবে নোটিশ প্রদানের পর একমাস অতিবাহিত না হইলে তাহার বিরুদ্ধে কোন মোকদ্দমা দায়ের করা যাইবে না এবং এই ক্ষেত্রে পরিষদের নিকট লিখিত নোটিশ অফিসে বিলি করিতে বা পৌছাইতে হইবে এবং কোন সদস্য, কর্মকর্তা বা কর্মচারীর ক্ষেত্রে লিখিত নোটিশ তাহার নিকট পৌছাইতে হইবে কিংবা তাহার অফিসে বা আবাসিক ঠিকানায় পৌছাইতে হইবে এবং নোটিশে ফরিয়াদী হইতে ইচ্ছুক ব্যক্তি তাহার এইরূপ পদক্ষেপের কারণ, নিজ নাম ও আবাসিক ঠিকানা উল্লেখ করিবেন; এবং মোকদ্দমা আর্জিতে এই মর্মে একটি বিবৃতি অর্ন্তভুক্ত থাকিতে হইবে যে, উপরোক্ত ব্যবস্থা অনুযায়ী নোটিশ পাঠানো হইয়াছে।
   
 
   
     
   
নোটিশ ও উহা জারিকরণ  
১০৫। এই আইন বা বিধি বা প্রবিধানের অধীন কোন ব্যক্তি কর্তৃক কোন কিছু করিবার অথবা না করিবার প্রয়োজন হইলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে তাহা প্রতিপালনের সময় নির্দেশপূর্বক নোটিশ জারি করিতে হইবে।
   
 
   
     
   
প্রকাশ্য রেকর্ড  
১০৬। এই আইনের অধীন প্রস্তুতকৃত এবং সংরক্ষিত যাবতীয় রেকর্ড এবং রেজিস্ট্রার, সাক্ষ্য আইন, ১৮৭২ (Evidence Act, 1872) এ যে অর্থে ব্যবহত হইয়াছে, সেই অর্থে প্রকাশ্য রেকর্ড (Public document) বলিয়া গণ্য হইবে এবং বিপরীত প্রমাণিত না হইলে তাহা বিশুদ্ধ বলিয়া গণ্য হইবে।
   
 
   
     
   
পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য, ইত্যাদি জনসেবক (Public Servant) হইবেন  
১০৭। পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য, কর্মকর্তা এবং কর্মচারী এবং পরিষদের পক্ষে কাজ করিবার জন্য যথাযথ ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্যান্য ব্যক্তি দণ্ড বিধি, ১৮৬০ (Penal Code, 1860) এর ধারা ২১ এ যে অর্থে জনসেবক অভিব্যক্তিটি ব্যবহৃত হইয়াছে সেই অর্থে জনসেবক (Public Servant) বলিয়া গণ্য হইবে।
   
 
   
     
   
রহিতকরণ এবং হেফাজত  
১০৮। (১) এই আইন বলবৎ হইবার সঙ্গে সঙ্গে Local Government (Union Parishads) Ordinance, 1983 (Ord. No. LI of 1983), অতঃপর বিলুপ্ত অধ্যাদেশ বলিয়া উল্লিখিত, রহিত হইবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন বিলুপ্ত অধ্যাদেশ রহিত হইবার পর -

(ক) এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীনে পরিষদ গঠিত না হওয়া পর্যন্ত বিলুপ্ত অধ্যাদেশ রহিত হইবার অব্যবহিত পূর্বে যে সকল পরিষদ বিদ্যমান ছিল তাহা এই আইনের অধীন গঠিত পরিষদ বলিয়া গণ্য হইবে এবং তদনুসারে উহার কার্যাবলী পরিচালনা করিবে;

(খ) বিলুপ্ত অধ্যাদেশের অধীন প্রণীত সকল বিধি, প্রবিধান ও আদেশ, জারিকৃত বিজ্ঞপ্তি বা নোটিশ বা মঞ্জুরীকৃত সকল লাইসেন্স ও অনুমতি এই আইনের বিধানাবলীর সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, রহিত ও সংশোধিত না হওয়া পযর্ন্ত, বলবৎ থাকিবে এবং এই আইনের অধীন প্রণীত, প্রদত্ত, জারিকৃত বা মঞ্জুরীকৃত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে;

(গ) পূবর্তন পরিষদের সকল সম্পদ, অধিকার, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব ও সুবিধা, সকল স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, তহবিল, বিনিয়োগ এবং এইরূপ সম্পত্তিতে অথবা তাহা হইতে উদ্ভূত সকল অধিকার এবং স্বার্থ উত্তরাধিকারী পরিষদের নিকট হস্তান্তরিত ও ন্যস্ত হইবে;

(ঘ) বিলুপ্ত অধ্যাদেশ রহিত হইবার পূর্বে পূর্বতন পরিষদের যে সকল ঋণ, দায় ও দায়িত্ব ছিল এবং উহার দ্বারা বা উহার সহিত যে সকল চুক্তি সম্পাদিত হইয়াছিল তাহা উহার উত্তরাধিকারী পরিষদের ঋণ, দায় ও দায়িত্ব এবং উহার দ্বারা বা উহার সহিত সম্পাদিত চুক্তি বলিয়া গণ্য হইবে;

(ঙ) বিলুপ্ত অধ্যাদেশ রহিত হইবার পূর্বে পূর্বতন পরিষদ কর্তৃক প্রণীত সকল প্রাক্কলিত বাজেট, প্রকল্প অথবা পরিকল্পনা বা তৎকর্তৃক কৃত মূল্যায়ন ও নির্ধারিত কর, এই অাইনের বিধানাবলীর সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, রহিত বা সংশোধিত না হওয়া পর্যন্ত, এই অাইনের অধীন উত্তরাধিকারী পরিষদ কতৃর্ক প্রণীত ও নির্ধারিত হইয়াছে হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে;

(চ) বিলুপ্ত অধ্যাদেশ রহিত হইবার পূর্বে পরিষদের প্রাপ্য সকল কর, রেইট, টোল, ফিস এবং অন্যান্য অর্থ এই আইনের অধীন উত্তরাধিকারী পরিষদের বলিয়া গণ্য হইবে;

(ছ) বিলুপ্ত অধ্যাদেশ রহিত হইবার পূর্বে পূর্বতন পরিষদ কর্তৃক আরোপিত সকল কর, রেইট, টোল, ফিস এবং অন্যান্য দাবি, ইহার উত্তরাধিকারী পরিষদ কর্তৃক পরিবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত, যেই হারে পূর্বে আরোপ করা হইয়াছিল সেই একই হারে আরোপিত হইতে থাকিবে;

(জ) বিলুপ্ত অধ্যাদেশ রহিত হইবার পূর্বে পূর্বতন পরিষদের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী উত্তরাধিকারী পরিষদের কর্মকর্তা কর্মচারী হিসাবে বদলী হইবেন এবং রহিত হইবার অব্যবহিত পূর্বে যে সকল শর্তে পরিষদের যেই পদে অথবা কর্মে নিয়োজিত ছিলেন পরিষদ কর্তৃক সেই সকল শর্ত পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত একইভাবে বহাল থাকিবেন;

(ঝ) বিলুপ্ত অধ্যাদেশ রহিত হইবার পূর্বে পূর্বতন পরিষদ কতৃর্ক বা ইহার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মামলা, অভিযোগ এবং অন্যান্য বৈধ কার্যাবলী পরিষদ কর্তৃক অথবা ইহার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা, অভিযোগ এবং কার্যাবলী রলিয়া গণ্য হইবে এবং তদনুসারে চলিতে থাকিবে অথবা অন্যবিধ ব্যবস্থা গৃহীত হইবে।
   
 
   
   
line2
 
১ দফা (৩৮ক) স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) (সংশোধন) আইন, ২০১৫ (২০১৫ সনের ২৮ নং আইন) এর ২(ক) ধারাবলে সন্নিবেশিত।

২ দফা (৪৬ক) স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) (সংশোধন) আইন, ২০১৫ (২০১৫ সনের ২৮ নং আইন) এর ২(খ) ধারাবলে সন্নিবেশিত।

৩ “, যাহাতে একটি ওয়ার্ডের লোকসংখ্যা অন্য একটি ওয়ার্ড হইতে ১০% এর কম বা বেশী না হয়” কমা, শব্দসমূহ, সংখ্যা ও চিহ্ন স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) (সংশোধন) আইন, ২০১০ (২০১০ সনের ৬০ নং আইন) এর ২ ধারাবলে বিলুপ্ত।

৪ দফা ১৯ক স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) (সংশোধন) আইন, ২০১৫ (২০১৫ সনের ২৮ নং আইন) এর ৩ ধারাবলে সন্নিবেশিত।

৫ দফা (খখ) স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) (সংশোধন) আইন, ২০১৫ (২০১৫ সনের ২৮ নং আইন) এর ৪ ধারাবলে সন্নিবেশিত